Search Here

Habu Gabu Dui Vai

Habib Book > Habu Gabu Dui Vai

Spread the love

হাবু গাবু (১)
হাবু গাবু দুই ভাই
ঘাটে আছে “মরা গাই
তা দেখে দুভাই মিলে
নেচে উঠে কোলো হলে
হাবু চায় সঙ্গে নিতে
গাবু চায় রেখে যেতে
এই নিয়ে দুইজন
তর্ক করে সারাক্ষণ

রোহিঙ্গা (২)

স্বদেশ মায়ানমার
সেথা থেকে হয়ে পাড়
রহিঙ্গারা বাংলায়
এসিয়ে থাকিতে চায়
হেথা নাকি সুখ বেশি
এই ভেবে দিবানিশি
পরিবার সমুদয়
বাংলায় জরো হয়

পাশাপাশি (৩)

আমি আছি পাশাপাশি
তোমার ঐ কোল ঘেষি
কত সুন্দর তোমার
রূপের দম্ভ বাহার
তোমার মুচকি হাসি
দেখে বেশ হয়ে খুশি
অন্তর মোর বেজায়
শান্তিতে জুড়িয়ে যায়

  রাজ হাঁস (৪)

নলেয়া নদীর পাড়ে
দুই পা বিস্তর ছেড়ে
সারাটা বিকেল বেলা
বসিয়ে আমি একলা
পাশে এক রাজ হাঁস
ছেড়ে যেন দীর্ঘশ্বাস
কহিল আমায় হেন
একলা বসিয়ে কেন

হাটি হাটি পা (৫)
হাটি হাটি পা পা করে
মাটিতে পিছলে পড়ে
শিখলাম হাটা চলা
সুখ দিয়ে কথা বলা
তারপর ধীরে ধীরে
বড় হনু একবারে
আর কোন ভয় নেই
যাহা পায় করি তাই

মেঘের ডাক (৬)
আষাঢ় মাসে আকাশে
মেঘ উড়ায় বাতাসে
মেঘে মেঘে ধাক্কা লেগে
শব্দ করে অতি বেগে
সেই শব্দে কত লোক
গিলে খায় ভয়ে ঢোক
ফের কেহ দ্রুত পদে
সরে যায় নিরাপদে

খেতে হাসি নয় (৭)
ঐ বাড়ির কাকা কাকি
এ মনকি তারা নাকি
ভাত খাওয়ার কালে
পানি খায় কৌতূহলে
এখন সময় কাকা
হেসে ওঠে একা একা
দেখে তাই কাকি কয়
খেতে বসে হাসি নয়

   ফুলকি (৮)

এই গ্রামের ফুলকি
মাথায় দিয়ে টুলকি
নৃত্য হেসে গ্রাম জুড়ে
বেড়ায় সে ঘুরে ঘুরে
কারো কথাই শোনে না
নিজের সখ ছাড়েনা
চঞ্চলা চপলা সেত
সদাচলে ইচ্ছা মত

অপচয় (৯)
হর্ষে যদি অহরহ
অপচয় করে কেহ
চিরকাল অনটন
গৃহে তার অনশন
করিবেইতা করিবে
এমন কাল আসিবে
তখন সে সেইদিন
হয়ে যাবে গৃহহীন

মিষ্টি খাও (১০)
এই দিকে দেও দৃষ্টি
দেখ থালা ভরা মিষ্টি
বোল ভরা চম চম
দুধ দই সর্ব সম
খাও আর গান গাও
আনন্দে ঘুড়ে বেড়াও
এরপর এলেফর
থালা ভরে দিব ঢের

মুড়ি খাওয়া (১১)
গুড় দিয়ে খাই মুড়ি
খেয়ে দেয়ে সদা ঘুরি
আম জাম আরো ফল
তার পরে খাই জল
দুধ দই মিষ্টি যত
খাইতা সময় মত
নুন দিয়ে পান্তা খেয়ে
নিশিতে যাই ঘুমিয়ে।

  চুলচুলো (১২)

আয় রে তোরা ছেলেরা
থাকরে তোরা মেয়েরা
নদী ভরা জল দেখে
পড়বি তোরা অসুখে
মোরা সব ছেলে গুলো
সদা খেলি চুলচুলো
যতই পানি হোকতো
মোরা তাতে নাই ভীত

আলসে (১৩)

হাবু বোঝায় আলসে
ঘুম থেকে উঠে শেষে
খাবার খেতে চায় না
ক্ষীদেও পেঠে সয়না
সবার খাওয়া হল
আমতা আমতা বলে
খাবার চায় যখন
পায় না খেতে তখন।

 চাঁদ মামা (১৪)

চাঁদ মামা দেখি আজি
দিচ্ছে আলো সোজাসোজি
সারাটা আকাশ জুড়ে
স্নিগ্ধ তায় ভর পুরে
জোনাকিরা এসময়ে
কাদো কাদো কন্ঠে কয়
কেন যেন মোর আলো
হঠাৎইনিভে গেল

 ইতিহাস (১৫)

ইতিহাসে আছে যথা
মিথ্যা নয় সত্য কথা
বঙ্গবন্ধুর খুনিরা
চিরকাল পাপি ওরা
যদি কভু দেখা পও
তাদেরকে পাকরাও
ওদের বেঁচে থাকার
নেই কোনো অধিকার

 আম খাব (১৬)

আজ নাহয় কালকে
আমিও কিন্ত সতকে
ওই পাড়ে মোড়া যাব
চুরিকরে আম খাব
যদি কেউ দেখে ফেলে
ভদ্র বেসে বৃক্ষ তলে
দাড়িয়ে সালাম দিব
পরে হা করে হাসির

চাঁদমামার আলো (১৭)
চাঁদ মামার আলোতে
চলো বন্ধু বেড়াইতে
নিশিকালে স্বচ্ছ দ্যুতি
চোখ ভরে দেখে অতি
ঘুরবো দুজনে মিশে
মন রম পরিবেশে
সারারাত ঘুরে পরে
প্রস্থান করবো ঘরে

সূয্যি মামা (১৮)

সূয্যি মামা সূয্যি মামা
তোর আজ বেগ থামা
তোর তাপের কারণে
গা ভিজে যায় এমনে
একটু জিড়োই পরে
তাপ দিস নির্বিচারে
নইলে তোর বাপেরে
ধরে আনব সজরে

 ডিম (১৯)

আহা টিম টিম টিম
হাঁস পাড়ে বড় ডিম
তার চেয়ে ছোট আর
তা হলো মুরগিটার
বাসা বাধে পাখি ডালে
ডিম দেয় তালে তালে
বাবুই পাখি থাকে কি
ঝুলন্ত বাসায় নাকি

শিয়ালের বিয়ে (২০)
রোদ এলো বৃষ্টি এলো
শিয়ালের বিয়ে হলো
বর কয় শিয়ালনী
খোশ গল্প করো শুনি
কনে বলে ও গো বর
একটু সুবুর কর
রোদ বৃষ্টি আর নাই
কনে বলে থাকো যাই

যদি হও বউ (২১)
তুমি যদি হও বউ
জানি বেনা আর কেউ
বধূ সেজে বিভুইয়ে
ঘুরবো তোমায় লয়ে
পরশিরা এই শুনি
করবে যে কানাকানি
মুখ চোরা বলে বুলি
দিবে যেন গালাগালি

প্রেমের সাগর (২২)
প্রেমের সাগরে আসি
সাতার দিতেছি ভাসি
দিন মাস পর হলো
বছর পেরিয়ে গেল
প্রিয়সীর দেখা নেই
বলতো কি করি ভাই
শত জ্বালা বুকের মোর
খোজ দাও মোরে ওর

ময়না (২৩)

সোনার পাখি ময়না
গা জুরে তার গয়না
মেহোমান এলে ঘরে
হাস্ত্রেজ্জল মুখ করে।
এ সময় অবিরত
কুশল জিগায় কত
এই মাত্র এলে নাকি
বাড়ির সমাচার কি?

টুনটুনি (২৪)

ছোট পাখি টুনটুনি
গান গায় গুনগুনি
ঠোট তার সুজযেন
পাতা মুড়ো যেনতন
ত্বরা করে দমাদম
বাসা বাদে এক দম
সর্বদা সেই বাসায়
সুখে পাখি নিদ্রা যায়

ব্যাঙ্গের কাশি (২৫)
জ্বড়ে পড়ে ব্যাঙ্গ কাশে
তাই দেখে মাছ হাসে
মাছ ভাবে মনে এই
ব্যঙ্গ হেন যাবে কই?
ভাবতে ভাবতে সত্যি
মাছ করে দম্ভ অতি
ব্যঙ্গ তখন লজ্যায়
দ্রুত পানিতে লুকায়

বকনা বাচুর (২৬)
বকনা বাচর হাম্বা
নাচ দেয় সদা সাম্বা
ভোদৌড়ে এসে যখন
মায়ের কাছে তখন
লেজ নেড়ে ইশারই
ক্ষুধার তীব্র জ্বালায়
দুধ খেতে চায় তার
মমতা মায়ী মাতার

যদু মিয়া (২৭)
হাটে যায় যদু মিয়া
দুই হাতে বেগ নিয়া
পিছে তার ছেলে মেয়ে
দুটছে হুমড়ি খেয়ে
যদু মিয়া করে রাগ
বলে তাদের যা ভাগ
যদু দেখে আরো পিছে
শাড়ি পরে বউ আছে

  ছাগল (২৮)

একটি নিয়ে ছাগল
দুভাই হয় পাগল
গলা দরে এক ভায়ে
তৈল সাথে সারাগায়ে
আর একজন মস্ত
খাবার দেয় গোসত
এ ভাবে টেনে হেসড়ে
ছাগল টা ফেলে মেরে

     বৌ (২৯)

বৌ যায় বাপের বাড়ি
গায়ে দিয়ে লাল শাড়ি
দুই হাতে শাখা তার
নূপুর পায়ে আবার
নাকে নোলক কপালে
টিপ দিয়ে হেঁটে চলে
ফিতা ছাড়া বেনি চুল
এ টুকুই তার ভুল

শিয়াল পন্ডিত (৩০)
হাতি বানর শিয়াল
করিয়েছো কি খেয়াল
খায় বেশি শক্তি অতি
সে হলো বিস্তর হাতি
কাজে নয় আজে বাজে
তাতেই বানর সাজে
হার নয় শুধু জিত
সেতো শিয়াল পন্ডিত

পোনা (৩১)
সাগরের জল লোনা
ইলিশ মাছের পোনা
একসাথে সেই জলে
ভেসে চলে দলে দলে
একা একা হলে পড়ে
বড় মাছ ধরে তারে
জবে তারা বড় হয়
আর যেন ভয়নয়

গায়ের বধূ (৩২)
ঘোমটা মাথায় দিয়ে
আলতা পরা দু পায়ে
গায়ের বধূ কোথায়
আস্তে আস্তে হেটে যায়
ননদেরা তাই দেখে
টিপ কাটে আড় চোখে
হায় বাপু কত ঢং
গায়ে মাখে রং চং

ফুল তুলি ৩৩
ফুল তুলি ফুল তুলি
ছেলে মেয়ে সব গুলি
সেই ফুলের মালায়
পড়া পড়সি গলায়
পড়ি আমরা সবাই
গ্রামেতে ঘুড়ে বেড়াই
দিন শেষে পড়ে সব
গৃহে করি কল রব

শাপলা ফুল (৩৪)
শাপলা ফুলের মালা
ভরপুর করে ডালা
পথে চলে সথি সখা
যদি হয় কারো দেখা
মালা দিয়ে তার গলে
যথা মূল্য নেয় তুলে
হাসাহাসি করে পরে
গৃহে যায় তারা ফিরে

 সুখ দুখ (৩৫)

সুখ দুখ মিলে মিশে
মোর কাছে ছুটে এসে
থাকে যেন একসাথে
একই সুতায় গেথে
এই আশা শুধু মনে
জপ করি সারাক্ষণে
সুখ দুখ হেন তাই
থাকে যেন ভাই ভাই

দিন রাত (৩৬)
দিন রাত ভাই ভাই
কিছুক্ষণ পর তাই
একজন আলো করে
অপর জন আধারে
পালা কর্মে এসে তারা
করে ফেলে দাই সারা
এভাবেই বাজি মাত
করে তুলে দিন রাত

চন্দ্র সূর্য (৩৭)
চন্দ্র সূর্য মুখো মুখি
থাকে তারা দেখাদেখি
একজন উঠে জবে
অপর রয় নীরবে
অপরাপর আকাশে
পালা করে উঠে আসে
এই ভাবে দুই জন
জালিয়ে তোলে ভুবন

 মেলা (৩৮)

বন্ধু চলন মেলায়
ওই ধুন্দল পাড়ায়
মোর কাছে টাকা যত
সে টাকায় মতো ইচ্ছা মতো
সারা মেলা ঘুরে ঘুরে
মিষ্টি খাব পেটভরে
কিনিব তোমার ঘড়ি
আর মোর ফিতা চুড়ি

হাসি কান্না (৩৯)
হাসি কান্না একসাথে
একই সুতায় গেথে
মনের মাধুরি মিশি
চলে সদা পাশাপাশি
শুখের বেলায় হাসি
দুখ কালে কান্না আসি
সারাটা জীবন কাল
করে উতাল পাতাল

কাবাডি (৪০)

চারপাশে কলকালা
হাতে হাতে হাত তালি
মধ্য খানে শোর গোল
যেন কত গন্ডগোল
কেহ ধরে কারো ঠ্যাং
কৌশলে চিট পটাং
দস্তা দস্তি হাড্ডা হাড্ডি
এরই নাম কাবাডি

কিতকিত খেলা (৪১)
কিত কিত কিত কিত
শিশু গেয়ে এই গিত
ফাকা মাঠে দিয়ে দাগ
হয়ে যায় দুই ভাগ
মাথায় বসিয়ে খোলা
ঠ্যাং করে তোলা তোলা
দাগা ঘরে দেয় দোলা
এটা কিত কিত খেলা

নৌকা বাইচ (৪২)
চল ছেলেরা নদীতে
নৌকা বাইচ খেলতে
নৌকার উপরে চরে
এ পার থেকে ও পারো
চলে যাবো ধরে বাজি
কোলা হলে মোরা মজি
আগে ভাগে সেই যাবে
পুরস্কার সেই পাবে

 বাবু সাব (৪৩)

আম জাম পাকা কলা
গাল ভরা টাসা মুলা
খেয়ে দেয়ে হাব ভাব
মোরোলের বাবু সব
যেই পথে যায় চলে
পথ ঘাট কেঁপে তুলে
চলা ফেরা দেখে তায়
অন্যরা সরে দরায়

মার কথা (৪৪)

মা কয় ভাতের পাতে
প্রতিদিন ওঠে প্রাতে
মন দিয়ে লেখা পড়া
পড়ে করো ঝরঝরা
অবসর পেলে তাও
ফাকি যদি নাহি দাও
তাহলে জীবন তবে
পরিপূর্ণ হয়ে যাবে

মাটির কূপি (৪৫)
নিশিতে মাটির কুপি
সাধ্য মতো চুপি চুপি
জ্বলে ফের গর্বে বলে
এমন আরকে জ্বলে
পড়ের দিন আকাশে
সূর্য যবে ওঠে আসে
কুপি বলে দেখে তাই
ওতো মোর বড় ভাই

জলদাস (৪৬) 

আমি আছি তুমি তাই
সব কাজ ফেলে ভাই
ছিরে ছুটে তাড়াতাড়ি
চলে এস মোর বাড়ি
দুজন আনন্দ মজি
জম দাস ঠেলে সাজি
দুহাতে ধরে পালাই
পুড়ি পুরু খলাই

রিমঝিম বৃষ্টি (৪৭)
আয় বৃষ্টি রিমঝিম
কলা খেতে তোকে দিম
জানিস কি কোন কলা
যে কলার ছাল তোলা
ছাল নাই মিষ্টি বেশ
দেখিতে যেন সন্দেশ
সে কলা যখন খাবি
তখন তো থেমে যাবি

ঘেউ ঘেউ (৪৮)
কুকুরের ঘেউ ঘেউ
শেয়ালের কেউ কেউ
শুনে থমকে দাড়ায
অন্যরা ভয়ে পালায়
সাহসি শিয়াল যারা
তারা দেয় জবে তারা
তাড়া খেয়ে কুভা গুলো
হয়ে যায় পথভুলো

পুতুলের বিয়ে (৪৯)
পুতুলের বিয়ে আজ
ঘরবাড়ি সাজ সাজ
সানাই বাজলা কতো
বাজিতেছে অবিরত
বিয়ে তাই উপলক্ষ
ঐ আসছে বরপক্ষ
সাথে সাথে ছোকড়ারা
বরকে দেয় পাহারা

খুকুমনি (৫০)
ওই মোর খুকু মনি
ভাত খায় মিশে চিনি
দুধ টুকু সাদা বলে
রাগ করে দেয় ফেলে
তৃষ্ণায় জল আবার
পান করে বারে বার
ক্ষুধার উদ্রেক হলে
যা পায় তা ভেঙ্গে ফেলে

   পাতা (৫১)

আম পাতা জোড়া জোড়া
তেঁতুল পাতার তোড়া
তাল পাতার পাখনা
কলা পাতার ঢাকনা
ঝড় বৃষ্টি কভু হলে
কচুরি পাতার তলে
লুকায় ব্যাঙ্গ তথায়
তবুও সে ভিজে যায়

পাগলামি (৫২)
কোথা যাও বন্ধু তুমি
করনাতো পাগলামি
হাত মুখ ধুয়ে এসো
চুপ করে খেতে বসো
দুধ ভাত কলা আম
সাথে আছে কালো জাম
এ সকল তুলে নাও
পেট ভরে খেয়ে যাও

বঙ্গবন্ধু (৫৩)
বঙ্গবন্ধু তুমি নাই
কার কাছে বল যাই
ছিলে তুমি নীতিমান
নেতৃত্ব গুনে মহান
অভাগীনি হতভাগা
আরো যত দূরভাগা
ওদের কে ভালোবেসে
খেয়ে ছিলে নিয়ে পাশে

 ঠিকানা (৫৪)

পদ্ম মেঘনা যমুনা
এই দেশের ঠিকানা
নাম যে বাংলাদেশ
সারাবিশ্বে খ্যাতি বেশ
ধান গম চাল তার
রয়েছে ভারা ভান্ডার
খেয়ে দেয়ে হলে বেশি
নিয়ে যায় পর দেশি

নান্টু মন্টু (৫৫)
নান্টু মন্টু দুই জনে
চলে তারা এক মনে
এক সাথে বসে খেতে
যা পায় তখন পাতে
সম ভাবে ভাগ করে
পূরন করে উদরে
পরে হাসে খিলখিল
এমন তাদের মিল

     দুষ্ট (৫৬)

দেখে যাও আরে ভাই
খাস খায় মরা গাছ
এই বলে দুষ্টু গুলি
জোরে দেয় হাত তালি
তাই দেখে বধূ পাশে
আচলে মুচকি হাসে
বড়রা হেন আশায়
দুষ্টুরা দৌড়ে পালায়

বিড়ালের ঘাড় মটকানো (৫৭)
বিড়াল এক ঘরতে
হেন কালে কুকুরটা
নাড়িয়ে তার লেজটা
ঘোরাঘড়ি করে কাছে
যেতা ভাত রাখা আছে
দেখে তাকে বিড়ালটা
মটকে ধরে ঘড় টা

বিড়ালের বিয়ে (৫৮)
বিড়াল তার বিয়েতে
ডাকে নাই দাওয়াতে
খোসসা করে ইঁদুর
গায়ে জরিয়ে মাদুর
সানাই বাজনা ঢোল
বেজে করে শর গোল
এসব দেখে বিড়াল
পালায় হেরে খেয়াল

বিয়ে বাড়ি (৫৯)
বিয়ে বাড়ি হলো পন্ড
দেখ কুকুরের কান্ড
কোথায় গোসত হাড়
খুঁজে দেখে বারবার
যদিও পায় একটা
কুকুর আছে যে কটা
খেতে তাই পিরাপিরি
করে দেয় মারামারি

দিন দুপুর (৬০)
দিন দুপুরে বাপরে
ডাকাতের ডাপটরে
আপসে যদি না দিস
এই বলে হিসাহিস
মালামাল যত ঘরে
ছালা ভরে লুট করে
তারপরে জমকার
দিয়ে দেয় হুমকার

 বিবাগি (৬১)

ডাকিস না পিছু মোরে
যেতে হবে বহু দূরে
দেখি আছেকি জগতে
চলেছি বিবাগি হয়ে
ছন্ন ছড়া মন নিয়ে
মন যেথা যেতে চায়
সেইখানে যাব হায়

সুখ চান (৬২)
সুখ চানের অসুখ
তাতে নেই কোনো দুখ
ঔষধ তার লাগে না
খেতেই তার বাছনা
অসুখ যখন আসে
তখন সে শুধু হাসে
মনে হয় বাতলামো
এই হলো তার ব্যামো

বাঘের ভয় (৬৩)

বাঘ কয় এসে তেরে
কে ঢুকল গত মোরে
শেয়াল কয় বাঘ কে
মাথা তুলে গত থেকে
আমি পণ্ডিত এসেছে
তোকে ধরব ভাবছি
বাঘ শুনে ভয়ে কয়
ওটা মোর গত নয়

রাজা (৬৪)

মাছের রাজা ইলিশ
দেশের রাজা পুলিশ
সব দেশে এই হয়
বাংলায় কিন্তু নয়
পুলিশ হলো সেবক
জন সেবায় বাহক
ইলিশ হতেও পারে
প্রজা তার সারে সারে

হরিণ (৬৫)
হরিণের বাকাশিং
নাচে তিরিং বিরিং
ঘাস আর লতা পাতা
এই তার প্রাণ দাতা
গোস্ত যদি পায় কভু
বাঘ নাকি তার প্রভু
তাই দিয়ে তা বাঘকে
সামলে নেয় নিজেকে

মশা মাছি (৬৬)
মশা মাছি ভাই ভাই
এক সাথে চলে তাই
মশা দিনেতে ঘুমায়
রাত্রে সে সুচ ফোটায়
মাছিফের দিবা বেলা
সঙ্গী শহকরে খেলা
এই ভাবে তারা চলে
দিনে রাতে হেসে খেলে

    বল (৬৭)

ওই যে জ্বলে বোয়াল
চ্যাপটাবেশ চোয়াল
লেজ খানা তার সুরু
গর্দান টা পুরু পুরু
গভীর জলে থেকে সে
সাতরায় অনায়াসে
ছোট মাছ পেলে পাড়ে
গিলে ফেলে ঢোক করে

মোর বউ (৬৮)
মোর বউ বুল বুলি
হেসে চলে গাল ফুলি
কথা বলে চপাচপ
হেটে চলে খাপাখপ
মোটা সোটা দেহ আর
বেশালম্বাচল তার
কাজের বেলায় শুধু
ভাব খানা নববধূ

সোনা ভান (৬৯)

ওই বাড়ি সোনা ভান
গাল ভরে পান খান
অতিথি আসলে পরে
নিয়ে যায় টেনে ঘরে
পাড়া পড়শি আসায়
পিঁড়েতে ধরে বসায়
তারপরে গল্প বলে
বাড়ি খানা জমে তুলে

   হিংসা (৭০)

তোরা বেজায় আলসে
দেখাস কত হিংসা
কখনো কাজের কালে
চলে যাস মিথ্যা ছলে
এ রকম হলে পরে
ভালো হতে পারি নারে
যদি ভালো হতে চাস
ছেড়ে দে বদ অভ্যাস

    লালু (৭১)

আজিম পুরের লাল
গায়ে দিয়ে লাল শালু
ঘুরে ঘুরে সারা গ্রাম
গেয়ে যায় ধুমধাম
গ্রাম বাসি সেই গান
মুগ্ধ হয়ে শুনে যান
সেই গানের বিরহ
শান্ত করে দেয়দেহ

সিদ্ধ মাছ (৭২)
হায় হায় একি শুনি
বক করে কানাকানি
অগ্নি দগ্ধে জল তাই
পুড়ে হলো সব ছাই
ছোট বড় সব মাছ
সিদ্ধ হয়ে পরে আছে
যেই মোরা সেথা যাই
তাড়িয়ে দেয় সবাই

সাহসী যুবক (৭৩)
ছেলেরা কোমর আটি
হাতে লাঠি বেশ কাটি
সাহসী যুবক যারা
আগে আগে যায় তারা
কেহ কেহ ঘাবরিয়ে
পালিয়ে যায় ভাগিয়ে
কিছু দুষ্ট ছেলে পেলে
জড়ে তারা হট্টগোলে

সোমবার (৭৪)

সোমবারে ছিল ছুটি
দুগায়ের ছেড়ে জুটি
খেলতে গিয়ে সবাই
বাধায় তীব্র লড়াই
ছোট্ট একটি কথায়
দুপক্ষ গোফ পাকায়
বল নাকি নয় গোল
ইহাতেই গন্ড গোল

সাইকেল (৭৫)
সাইকেল ঘাড়ে নিয়ে
হেঁটে চলে খালি পায়ে
জুতো জোড়া হাতের তার
ক্ষয় রোধ করিবার
কথায় কথায় বলে
সাইকেল যদি চলে
নষ্ট হতে ক্ষনকিন্তু
লাগিবেনা অধিকন্ত

 জলে বাসা (৭৬)

ডিম পাড়ে মাছ গাছে
কভুকি কেউ দেখেছে
শোন আরো পাখি জলে
বাসা বাধে থাকে বলে
মানুষেরা হাটাহাটি
করে বেশ ফাটাফাটি
দুই হাতে হেঁটে চলে
পা দুটো উপরে তুলে

বাপবেটা ওরা চোর (৭৭)
বাপবেটা ওরা চোর
সদা খোজে ঘর দোর
দুজন একত্রে রাতে
বাহির হয় চুরিতে
দিনে খায় ছেলে কিল
তবু হাসে খিলখিল
এটা হলো অভিনয়
গ্রাম বাসি তাই কয়

খেলাঘর (৭৮)
বন্ধু বান্ধব সকলে
বই খাতা ক্লাসে ফেলে
খেলা ঘরে যায় সব
হইহই কলরবে
মাস্টার মশাই হাতে
দাবড়িয়ে দেয় বেতে
ছাত্র গুলো ভয় পেয়ে
ক্লাসে বসে দৌড় দিয়ে

নাচনেওয়ালী (৭৯)
নাচনেওয়ালী নাচে
ছেলেরা সব উপচে
চৌদিকে গিরে দারায়
ওই মোড়ল পাড়ায়
মোড়লে এসব দেখে
লাঠি দিয়ে দেয় রুখে
আর এতে ছেলে গুলি
শুরু করে গালাগালি

বাংলাদেশী (৮০)
আমি যে বাংলাদেশী
সর্বদা থাকি সাহসি
কোনও কিছু তোয়াক্বা
না করেই মারি ছক্কা
অসভ্যর কাজ বেশ
নিমিষেই করি শেষ
এই পালোয়ান গিরি
দুনিয়ায় যায় ছড়ি

   ভন্ড  (৮১)

সপ্পুটার দেখ কান্ড
সেজে এক মস্ত ভন্ড
মাথায় দিয়ে পাগরী
ঘুরে চলে বাড়ি বাড়ি
লোকে বলে বেশ বেশ
এসে গেল দরবেশ
পিছনে শিশুর দল
করতেছে কোলাহল

  দাদু ভাই (৮২)

দাদা আছে মোর কাছে
দাদি দেয় ভাত পাছে
ইহাতে দাদু বাসায়
হাসি ঠাট্টা মস্কবায়
বলে সে সচরাচর
আমি নই নাতি বর
আমি বলি দাদু ভাই
তুমি থাক আমি যাই

 হাসা হাসি (৮৩)

বেশি হাসি ভালো নয়
এই কথা দাদু কয়
সেই হাসে বেশি বেশি
দাঁত যায় তার খসি
মুচকি হাসে সে পড়ে
মুখ খানি নত করে
খেতে বসে দরকার
চুপচাপ থাকবার

 হাঁস ও বক (৮৪)

বেলা শেষে সন্ধ্যা ক্ষণে
হাঁস ও বক দুজনে
বাড়ি ফেরার সময়
মুখো মুখি দেখা হয়
কেবা আগে যাবে বাড়ি
এই মত বাজি ধরি
কার বাড়ি কতদূর
এই বলে দেয় দৌড়

   বিল (৮৫)

বিলে পানি থই থই
হাঁস ডাকে টই টই
সাদা বক সারে সারে
আসে উরে দুই পারে
মাছ পায় যদি কেহ
সেটা নিয়েই কলহ
হাঁস বক ঠোঁটে ঠোঁটে
শুরু করে এক ঘাটে

অজুহাত (৮৬)
সুকুর আলী কদম
খায় নরম গরম
কাজ থাকলেও কোনো
নিত্যৃ অজুহাত হেন
পেট ধরে তারাতারি
বলে হায় মরি মরি
বৌদ্য দেখে বলে তাই
তার কোনো রোগ নাই

কুমির মাছের পেটে (৮৭)
কুমির মাছের পোট
শুনে তাই তিমি চটে
ডাকিলে সভা সকলে
হাজির শোল বোয়ালে
বোয়াল বলে শোলকে
ধরব বেটা তিমিকে
তিমি শুনে বলে তাই
এর মধ্যে আমি নাই

হরিণের নাচ (৮৮)
পতুলের বিয়ে হবে
হাতি ঘোড়া সঙ্গে যাবে
হরিণ যাবে নাচতে
কোকিল যাবে গাইতে
বাকি সব পশু পাখি
বসে রবে দেখা দেখি
সব দেখে শেয়াল
হারাবে তার খেয়াল

নজরুল  (৮৯)

ঝাকড়া ঝাকড়া চুল
মুন্ডে বাতি নজরুল
গান গেয়ে হেটে যায়
ফুঁদিয়ে বাশি বাজায়
মাঝে মাঝে তালে তালে
গান গাইবার কালে
জামা ধরে নেচে উঠে
আস্ত যেন যাত্রা মাঠে

রবীন্দ্রনাথ (৯০)
রবীন্দ্রনাথ হায়রে
কোথায় সেজে বাপরে
মুখে তার লম্বাদড়ি
তাতে কারো নাই জুড়ি
এক বার দেখা দাও
আমায় গান শোনেও
তবে হস্ত শিল্প গুন
চিত্রে দেখায় নিপুন

কুমিরের জ্বর কাশি (৯১)
হাটু জলে নেখে আমি
করি লাম গোয়া তুমি
কোত্থেকে কুমির এসে
জিগাইলো জ্বরে কেশে
এখানে নামলে কেনো
জ্বর কাশি হয় যেনো
কতদিন যেনো ধরে
ভুকতেছি কাশি জ্বরে

চার ভাই (৯২)

কুমিরেরা চার ভাই
কারো সাথে দেখা নাই
কাটাস টা চড়ে গাছে
কুই সাপ বাঁচে মাছে
টিকটিকি ছোট বলে
একা একা ঘুড়ে চলে
কুমির বড় হলো যে
সুনাম তাই সমাজে

ঝড় (৯৩)

একদিন দুই দিন
তারপর দিন দিন
ঝড়ে আর বায়ু বয়
কালো মেঘে ছেড়ে যায়
সাদা মেঘ কালো হয়
বৃষ্টি ঝড়ে ধেয়ে ধেয়ে
আকাশে সর্বদা ভাসে
আষাঢ় শ্রাবণ মাসে

মহাবীর (৯৪)

এই সেই মহাবীর
জল সমস্ত নদীর
এক নিমিয়েই সেচে
তার পর উঠে নেচে
শুনে এ সকল কথা
ঘুরে যায় মোর মাথা
বুক ফুলে তবু বাল
এইটা মোর মামুলি

বৃষ্টি এলো (৯৫)
বৃষ্টি এলো আয় ভাই
তারাতাড়ি বাড়ি যাই
বই কিন্তু গেলে ভিজে
রাগ কারবে বাবা যে
বৃষ্টি পরিবার আগে
চলে যাই দ্রুত বেগে
বাড়ি গিয়ে তার পরে
ভাত খাব পেট ভরে

হিন্দ ধর্ম  (৯৬)

হিন্দু ধর্মের কি মতি
মাটি দিয়ে বানিমূতি
রং ঢং গায়ে ঢেলে
হই চই কোলা হলে
মন্দিরে সাজিয়ে রেখে
তারপর মুখে মুখে
হরে কৃষ্ণ হরে রাম
এ বলে করে প্রনাম

একুশে (৯৭)

একুশের চেতনায়
মন মোর উড়ে যায়
একুশ আসলে পরে
বাংলা ভাষায় তরে
দিয়েছিল যারা প্রমাণ
তাদের করে সম্মান
স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে
নিরবে থাকে দারিয়ে

বসন্ত (৯৮)

বসন্ত যে এলো হায়
ধীরে ধীরে বায়ু বয়
গাছের পাতা বাতাসে
নাচে আর দিব্যি হাসে
কাক ডাকে গাছে গাছে
পেচা ঘোরে তার পাছে
যত সব পাখি পাখি
উড়ে করে ডাকাডাকি

কোকিলের বন্ধু কাক (৯৯)
কোকিলের বন্ধু কাক
সবাই কে করে তাক
কাক তাড়ায় কোকিলে
ডিম টা খেয়েছে বলে
কোকিল ভয়ে কাঁপছে
বলে কথা সব বিছে
কাক ফের ধরে তারে
দুই কান মলে ধরে

নয়া বৌ (১০০)

নদীর ঘাটে নয়াবৌ
সাথে তার নাই কেউ
একাএকা ঘাটে বসে
দেখে মাছ কত ভাসে
ছোট বড় মাছ গুলি
সারি সারি মুখ তুলি
বৌকে সালাম জানায়
তারপর ডুবে যায়

বাড়ির পাছে৷ (১০১)
নয়া বৌ বাড়ির পাছে
দুচোখ আচলে মুছে
হাসিবার চেষ্টা করে
তবুও হাসি না ধরে
শুরু চিন্তা বাপমার
এই কষ্ট চেপে মনে
কাঁদছে বধূ গোপনে

ইয়াকুর  (১০২)

এই গ্রামে একজন
বাস করে মহাজন
নাম তার ইয়াকুব
ধর্ম কর্মে বেয়াকুর
টাকা দেয় সুধে ধার
এই তার কারবার
তার কাছে নাকি মান
টাকার নয় সম্মান

এক বুড়ি (১০৩)
আম গাছটির নিচে
এক বুড়ি নিত্যৃ নাচে
চুল তার এলো মেলো
সারা গায়ে মাথা ধুলো
নাচতে নাচতে বুড়ি
হেসে খায় চিঁড়ে মুড়ি
ফের সেই রাগ হলে
চিঁড়ে মুড়ি ছুঁড়ে ফেলে

নেকড়ে (১০৪)
এই বনে বাস করে
হিংস্র এক নেকড়ে
সুস্বাদু খাবার তার
হারনের গোস্ত হার
হরিণ পেলে একটা
কামড়ে ধরে গলাটা
উপর করে ফেলিয়ে
মাংসো খায় ছড়িয়ে

হাদুরাম ভাদুরাম (১০৫)
হাদু রাম ভাদু রাম
এক সাথে করে কাম
সারাদিন ঝড়ে ঘাম
তাদের নেই আরাম
সন্ধা হলে বসে তারা
হাতে নিয়ে একতারা
চিবিয়ে সুপারি পান
সারা রাত করে গান

নীলচান (১০৬)

ঐ গ্রামের নীল চান
রাস্তা দিয়ে হেটে যান
হাত দুখানি নারিয়ে
মাথাটা মস্ত বনাকিয়ে
কোন ও কথা কয় না
কারও কথা শোনেনা
নেই কোনো দৌড় ঝাপ
হেটে চলে চুপচাপ

চিড়ামুড়ি (১০৭)
চিড়া মুড়ি গড় খই
সাথে আছে দুধ দই
আরও মুড়কি ভাজা
খেতে লাগে ভারি মজা
দুধের ক্ষির পায়েস
মিষ্টি লাগে খেতে বেশ
কোরমা আর পোলাও
পেট ভরে তাও খাও

কালবৈশাখীর ঝড় (১০৮)
কালবৈশাখীর ঝড়ে
গাছট গেল উপরে
তার তলে ছিল যত
ছেলেরা খেলায় রত
ওর মধ্য কেহ কেহ
ভূতলে লুকায় দেহ
কেউ ফের ভয় পেয়ে
চলে যায় দৌড় দিয়ে

হিমালয় (১০৯)
টগবগে দেহতার
বঙ্গবন্ধু নাম যার
চশমাটা চোখে দিয়ে
পাইপটা মুখে দিয়ে
এমন ভাবে রাস্তায়
হেলে দুলে চলে যায়
দেখে তারে মনে হয়
আস্ত যেন হিমালয়

নয়া বউ (১১০)
নয়া বউ ভাত খায়
ঘোমটা দিয়ে মাথায়
কেউ ফের ঘরে এলে
সরমে কাশির ছলে
ঘর থেকে চলে যায়
ভাবি সাব দেখে তায়
বউ এর গলা ধরে
মুখ চেপে ঠাট্টা করে

পাকা আম (১১১)
আম বাগানের মধ্যে
পাকা আমের সান্নিধ্যে
দুইজন সাথি জুটি
করলাম ছুটা ছুটি
পায়নি তো পাকা আম
ঝরলো গায়ের ঘাম
তবু আশা ছাড়ি নাই
পাকা আম যদি পাই

 পাখনা (১১২)

পাখির মতো পাখনা
থাকতো যদি দুখনা
বাতাসের সাথে মিশে
ঘুর তাম দেশে দেশে
পাহাড় পর্বত যত
দেখতাম ইচ্ছা মতো
দিন শেষে অবশেষে
ঘুমি তাম নিরে এসে

   টাকা (১১৩)

জীবনটা হলো মাটি
কি করব টাকা কুটি
টাকার জন্যই আমি
ছেড়ে এই জন্মভূমি
চলে গেলাম বিদেশে
বিশ তর টার আসে
ফিরে এসে দেশে দেখি
নেই কোনো সখা সখি

   পণ (১১৪)

জীবনে করেছি যত
দোষ ভ্রতি ক্রমাগত
ঐ সমস্ত ভুল আর
না করে কভু আবার
মনে মনে এই পণ
করি আমি আজীবন
সত তার নিসতায়
চলি যেন সর্বদায়

 সূর্য (১১৫)

সূর্য বাবু ডুবু ডুবু
আলো তাই হলো কাবু
আষাঢ় আসিয়া বলে
সূর্য নাকি তীব্র জ্বলে
কোথায় সেই সূর্যটা
মটকে ওর মুন্ডুটা
খেয়ে ফেলব এবার
রাত্রে আসিলে আবার

দেশেরযা দরকার (১১৬)
দেশের যা দরকার
একাই কি সরকার
বহন করিবে সব
আসুন আজ সবাই
সেটা কিন্তু অসম্ভব
দেশের গাই সাফাই
মন খুলে পণ করি
মিলেমিশে দেশ গড়ি

পোড়ামুখি (১১৭)
জল্পনা কল্পনা শেষে
দেখলাম বাড়ি এসে
ভাই বোন কেউ নাই
ছেলে মেয়ে স্ত্রীও তাই
খোঁজ করে পড়ে দেখি
আমি নাকি পোড়া মুখি
এই ভাবনা ভাবিয়ে
সবাই গেছে পালিয়ে

দুর্নিতি (১১৮)

দেশের সব দুর্নিতি
রৌদ করিলে উন্নতি
হবেই হবে নিশ্চয়
এ কথা সকলে কয়
আসুন তাই বাঙালি
পণ করি সব মিলে
মন থেকে ছুড়ি আড়ি
দুর্নিতি ভাওতা বাজি

মাটির পুতুল (১১৯)
মাটির পুতুল আজ
পড়েছে রঙিন সাজ
কেউ বর কেউ কনে
সত ধন্য রূপে গুনে
বিয়ের আসরে বসে
চোখ বুঝে সুরু হাসে
মনে মনে ভাবে আর
এই বুঝি সংসার

  মশা (১২০)

মশা বলে কার বেশি
মোর চেয়ে শক্ত পেশি
যদি থেকো কেহ রাজি
শর্ত করে ধরো বাজি
সেথা ছিল এক হাতি
সাথে তার নিত্য ভিতি
এই শুনে অতি কায়
ভয় পেয়ে সরে যায়

 রাজা (১২১)

রাজার যে হইছেকি
মসনদ দিয়ে ফাকি
চুপ চাপ শুয়ে আছি
নেই কেহ তার কাছে
পাএ নিএ সভা সদে
চিন্তা রত পরিষদ
দাওয়ায় বসে রানি
মোছে সে চোখের পানি

ঈদের দিন (১২২)
ঈদের দিনে বেশতো
খুশিতে ওরা নাচতো
ছেলে মেয়ে বাড়ি বাড়ি
দল বেধে সাডি সাড়ি
নতুন পোশাক পড়ি
নাস্তা পানি পেটে পুড়ি
আলস্য করি হারাম
বেড়াইতো সাড়াগ্রাম

ঈদের দিন সকালে (১২৩)
ঈদের দিনে সকালে
দাদি এসে মথা বুলে
আস্তে আস্তে ডেকে কয়
বিছানায় আর নয়
তারাতারি যাও উঠে
নামাজ পরিতে মাঠে
দাদির কথায় আমি
ছারি লাম আলসেমি

রাজা-রানি (১২৪)
রাজা রানি পাশাপাশি
খুশি মনে আছে বসি
মুখ তাদের একটা
চলছে ভালো রাজ্যটা
এই ভেবে রাজা রানি
মুছে ফেলে কষ্ট গ্রানি
প্রজার সুখের তরে
দুজনে প্রার্থনা করে

রাজার অসুখ (১২৫)
রাজার আজ অসুখ
তার মনে নাই সুখ
পাশে বসে রানি শুরু
খাওয়ায় তারে মধু
পাত্র মিত্র দাস দাসি
পাশাপাশি ঘেলা ঘেসি
বাইরে প্রজা সমস্ত
কান্নায় বেধুম মস্ত

গোপাল ভাঁড় (১২৬)
গোপাল ভাঁড়ের আজ
কপাল পরেছে ভাজ
মুখে তার কথা নেই
সভা কক্ষে আসতেই
উপস্থিত সভা সদ
করে তার তোষামোদ
তবুও গোপল ভাঁড
চুপসে যেন অসাড়

লালু নুলু দুই ভাই (১২৭)
লালু নুলু দুই ভাই
পিতা মাতা কেহ নাই
সহায় সম্পদ চুষি
নিয়েছে সব পড়সি
এই দুঃখে দুজন
করেনি আর ভোজন
পরে তারা গলা ধরে
রাস্তায় বেরিয়ে পরে

কাঁপড় কাচা (১২৮)
পুকুর পাড়ে বউটা
শক্ত করে কোমড়টা
কাঁপড় কাচে দুহাতে
হাপাইতে হাপাইতে
তবুও স্বামীর তরে
মনটা কেমন করে
কখন যে স্বামী এসে
ডাকিবে মুচকি হেসে

আয় আয় দিদি মনি (১২৯)
আয় আয় দিদি মনি
খেয়ে যাও নাস্তা পানি
আম দুধ কলা আর
গুড় চিনি সাথে তার
পোলাও বাদাম পেস্তা
পেট ভরে খেয়ে নাস্তা
তার পর বাড়ি যাও
বিছানায় গা জরাও

       বিশ বছর বয়স

কি যে হলো মোর বিশ বছর বয়সে
টগবগে চেহারা মনের উত্তেজনা
সর্বকাজে গরিমসি সদা আনমনা,
বিছানা থেকে উঠে নিত্য অতি প্রত্যুষে
পড়িতে বসি যখন মনের উচ্ছাসে।
বই খাতা হাতে নিলে নানান কল্পনা
আজে বাজে ভাবনা আরো তালবাহনা
মাথায় চাপে তখন কোথাথেকে এসে।

লেখা পড়া ফাকি দিয়ে নিত্যলুকোচরি
খাওয়া-দাওয়ার বালাই নাই শুধু,
গান বাজনার পিছে প্রতিদিন ঘুরি
আর বাড়িতে বোঝাই আমি এক সাধু।
এই বয়সে হলো মোর দশা এমন
সবদা ভবঘুরে স্থির হয়না মন।

           কাঁশফুল

বসন্ত আসিল যে ফুল দেখিবে আয়
ওই যে সাদা কাশফুল নদীর তীরে
সারি সারি ফুটেছে দেখ নয়ন জুরে
মৃদু মৃদু বাতাসে ফুলগুলো দোলায়
চতুর্দিকে সুগন্ধ তাতে ছড়িয়ে যায়
গন্ধ শুকে শত কীট কাঁশফুল ঘিরে
ফুলের সুবাসে কেই মারমারি করে
সৌন্দর্য মন্ডিত তার এতে সেবা পায়

বসন্ত প্রাণ গেল কাঁশফুলের ঘ্রানে
পাখিরা পায় বুঝি মিষ্টি গানের সুর,
গাছে গাছে নেচে নেচে পাখিদের গানে
বসুন্ধারা হেসে ওঠে আনন্দে মধুর।
ঠিক যেন কাঁশফুলের সান্নিধ্য পেয়ে
বসন্তে ভূবন আসে নবরূপ নিয়ে ৷

         মুসাফির ভাই (১)

হে মুসাফির ভাই কোথায় তুমি যাও ?
কেমন বস্ততব গেরয়া বসন
গোড়া হতে পাজামা আল খেল্লা যেমন,
গলা জুড়ে মালা হাতে এক তারা টাও
টং টং শব্দে হবেক ঢঙ্গে বাজাও।
কৃষ্ণ বর্ণ কেশ কেশ জটলা পাঁকন
যুখার বেয়ে ঝুলিয়ে পড়েছে এমন
চুপ করে চলেছে মোর পানে তাকাও।

আমিও তোমার সঙ্গে মুসাফির সেছে
চলে যাব আস্তানায় সঙ্গী করে নাও
শিখব চাল চলন অতি ধ্যানে বুজে
পালন করিব সব যা বলিবে তাও
আমি হব শিষ্য আর তুমি হবে গুরু
এভাবে জীবন মোর হবে ফের শুরু।

         মুসাফির ভাই(২)

কে গো ভায়া তুমি এই পথ বেয়ে যাও
বসে আছি হেথায় কত বছর ধরে
স্বেচ্ছায় মোর পানে কেহ চাহেনা ফিরে,
শোন ভাই যদি একটু সময় পাও
মোর পানে শুধু একবার ফিরে চাও।
জানিনা কে ভাই তুমি যাচ্ছ কতদূরে
চুপচাপ পথ বেয়ে অবনত শিরে
আমিও যাব মোর হাতটি ধরে নাও।

জানো কি ভাই সবাই যে এত যে ব্যাস্ত
মোর কথা শোনার সময় নাকি নাই,
হর্সে বিভর কেহ খেলায় কেহ মত্ত
কথা বলার অবসর পায়না তাই।
এক ঘরে চিরদিন থাকি একা একা
নিরানন্দে মোন মোর হলো বড় ফাঁকা৷

              মুসাফির (৩)

মুসাফির তুমি আজ যাবে কতদূরে ?
একাকি হেঁটে হেঁটে অন্য মানস্ক ভাবে
মাটিতে চোখ গোলায়ে চলছো নীরবে
কাহার সান্নিধ্য পেতে কোনবা সুধুরে
কেনই বা মুখ বুঝে যাচ্ছ তার তরে?
আমিওতো বিবাগি এক ভূবনে তবে
আমারে সঙ্গে নিলে কত গল্প গুজবে
পারি দিতাম সারাপথ আনন্দ করে।

কত খানে কত কিছু দয়ালুর সাথে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে রহে সারা দুনিয়ায়,
পথে তাই চেয়ে রই মনে এই বিধে
দেখিতে পারি যদি আমরা দুজনায়।
মুসাফির ভাই আজ সঙ্গে নাও মোরে
দেখিব সব কিছু নয়ন দুটি জুরে।

  চালের বাজারে চাল বাজি

চালের বাজারে চাল বাজি রুখিবেকে
জোনে জোনে মহাজন পাল্লা নিয়ে বসি
যেন তেনো মেপে দেয় হোক কম বেশি,
গেরস্ত বা ব্যবসায়ী দোষ দেব কাকে?
বিস্তর লাভের লোভে চরাদাম হাঁকে।
আড়তে আছে যারা সবাই মিলি মিশি
এক হয়ে চালের দাম করে উয়াষী
কিছু বলিলে সবাই ওঠে চোখ পেরে

মোটাসোটা মহাজন খেয়ে পেট ভরি
নিশিকালে বিছানায় শুয়ে নাক ডাকে
দিনের বেলা ওরা দেখায় বাহাদূরি
চোখ রাঙ্গিলে কেহ হেনস্ত করে তাকে।
এমনি করে সবাই পাল্লা নিয়ে হাতে
এক দামে চাল বেঁচে ওরা এর মতের

             চেয়েছি

জন্মের পর যখন শিখেছি বুঝতে
মিষ্টি মিষ্টি ভালো কথা আর খেলা ঘর
চেয়েছি ভালোবাসা বাবা-মার আদর,
পছন্দের জিনিসটা কাছে টেনে নিতে
হা হুতাসে থাকিতাম সদা ওৎপেতে।
দাদা-দাদির কাছে নিত্য শোয়ার পর
মোরে নিয়ে জুড়ে দিতো গল্পের আসর
তাই মন চাইতো তাদের কাছে শুতে।

যখনই কোনো খেলা খেলতে চেয়েছি
মনের খায়েস টুকু মেটাবার তরে,
তখনই বন্ধু বান্ধবে ধরে এনেছি
অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিন্তু মাঠে জোড় করে।
এরকম দেখে সবাই বলিত বাছা
সত্য পথে চল সদা ছাড় মিথ্যে খোছা

     ওহে পথিক ভাই

একটু দাড়াওনা ওহে পথিক ভাই
আজ আমি খুশি তোমায় দেখার পরে
কতদিন যে হয়ে গেলো শুয়ে কবরে,
তোমার কাছে মোর চাবার কিছু নাই
দুহাতে মোর জন্য একটু দোয়া চাই।
পথিক ভাই সেই থেকে আত্তাটা মোরে
একটু পুন্যের জন্য আহাযারি করে
কে কখন মোর তরে দোহা চাহে তাই৷

আজ আফসোস হয় কেনো দুনিয়ায়
বেঁচে থাকিতে নিত্য ছিলাম আহলাদে,
আত্তাটা তাই একটু পুন্যের আশায়
সারাক্ষন হেথা সেথা ঘুরে আর কাঁদে।
তাইতো বলিতে চাই দুনিয়ার তরে
সওয়াবের আসে চলো আনন্দ ছেড়ে।

         কর্মেই সুখ

মুখে মুখে বলি কথা হাতে করি কাজ
সারাক্ষন ব্যাস্ত থাকি নেই অবসর
কর্মক্ষেত্রে আমিএক দক্ষ কারি গর,
কর্মজগে মেতে উঠি পরিহরি লাজ
ধুলোয় মিশে থাকি বহিরূপ সাজ।
মাঠে ঘাটে কোনো কাজে নেই মনে ডর
কর্মেই সুখ মোর সারাজীবন ভর
কর্মেই থাকে সদা শান্ত মোর মেজাজ ।

কর্মই সুখের চাবি কাঠি সংসারে
কর্ম দিয়েছে মোরে শক্ত সুঠাম দেহ,
দিয়েছে আরো ঐশ্বর্য্য সমৃদ্ধি আহারে
বিনাকর্মে সুখ কি পেয়েছে আর কেহ।
যেজন সর্বক্ষন কর্ম চেপে থাকবে
সুখ এসে গৃহে তার উকি ঝুঁকি দেবে।

         ঈদের খুশি

মন খারাপ হলো ঈদের দিনে শেয়ে
পাজামা পাঞ্জাবি পরিহার করে আমি
আহার পড়ে গেলাম বিছানায় ঘুমি,
পড়াশুনায় থাকি নরম তক্তপোষে
নিয়েছিলো কারা গভীর নিদ্রার আসে
এক ঘুমেইরাত শেষ হায় গোরামি
ভোরে উঠে বিছানায় রইলাম যিমি
যেন ঈদের খুমি উঠছে চোখে ভেসে

ঈদের আনন্দ কভু ভুলিবার নয়
সখা সখি ঘুরতাম একসাথে মিলি,
গাঁয়ে পড়ে নতুন পোষাক শমুদয়
নামাজান্তে মাঠে করতাম কোলাকোলি।
এসকল আনন্দে দিন যখন যায়
দিন শেষে মোরা আফসোস করিহায়।

             মিঞা ভাই

মিঞা ভাই বলতো টাকার দাম কত?
আমিতো জানিনা কিছুই তুমিকি জান ?
টাকার বিনিময়ে অমানুষরা হেন,
পথে ঘাটে গৃহেওরা গিয়ে আচ্ছামত
ব্যাধারক পিটুনিতে বকা ঝকা শত
এভাবে নিপীড়ন টাকার জন্য যেন
আদমরা করে রাখে দয়া নাই কোন
পাশানিরা শুধুই টাকার কাছে নত।

মোর তো জানা নাই তবে শুনেছি কিছু
টাকার গন্ধে নাকি খুনিরা মিঞা ভাই,
জোট বেধে টাকা ওয়ালার পিছু পিছু
ধাওয়া করে তারে ধরে ফেলে সবাই।
হৃদয় হিনা লুভিরা তল্লাসের পরে
লুকিয়ে টাকা জীবনটাও নেয় কেরে।

                 হাসি

বিপদে যদি কেহ মুখে হাসি ফোটায়
শক্তিমান সে বেশ সমাজ সংসারে
দৃঢ় সাহস তার বক্ষে উপচে পড়ে,
নাই কোনো শোক আবেগ ভয় আত্মায়
উদ্যাম বেগে সে যে সতত ব্যাস্ত তায়।
অক্ষমতা মন থেকে ফেলে দিয়ে ঝেরে
ঝাপিয়ে পরে একা পরের আশা ছেরে
নিরালশে হয় মত্ব কর্ম সমাধায়।

হাসির বিশেষ গুনে মনে জোর বারে
সুঠাম দেহ গড়িয়ে সদা রাখে সুস্থ,
হাসি বিনা অনেকে দুসচিন্তার ঘোরে
শীর্ণ কায়ে হয়ে যায় অবসাদ গ্রস্থ৷
সদা মনে হাসি পুষে রাখিবে যে জন
সেই জন নিরোগি ভাবখানা এমন।

              টোকাই

ঢাকায় দেখি সেদিন একখানা বস্তি
শিশু কতক সেথা সব একত্র হয়ে
বসে বসে মুখ বুজে কেহ গান গেয়ে,
হেসে হেসে কিছু জন করে ধস্তাধস্তি
ইহাই নাকি ওদের মস্ত খেলা কুস্তি৷
এই দেখে কেহ কেহ কর তালি দিয়ে
দুলায় লুটিয়ে পরে খুর পাক খেয়ে
চন্চল মনে ওরা পায় বেধুম স্বস্তি।

লেখা পড়া নাই ওদের এই বয়সে
রাস্তায় ঘোরাঘুরি আর টোকায় গিরি,
সারাদিন এমন চলন বেলাশেষে
পেটের জ্বালা ঘোচাতে গৃহে আসে ফিরি।
নিদ্রাহীন বিছানায় শুধু শুয়ে শুয়ে
নিরন্তর চিন্তায় মগজ ক্ষুয়ে ক্ষুয়ে।

               মাতব্বর

মাঝে মাঝে গ্রামে দেখি কিছু মাতব্বর
একের পিছনে অন্যকে উসকে দিয়ে
কলহের জাল ফেলে কুবুদ্ধি খাটিয়ে,
না বুঝে উভয় পক্ষ নিশিদিন ভর
মাতব্বরের খোজে সতত তৎপর।
বুদ্ধিমান মাতব্বর দুপক্ষকে নিয়ে
চুপি চুপি কিঞ্চিত অর্থের বিনিময়ে
হাতে হাত মিলে দেয় অপসের পর।

এরকম বুদ্ধির জোরে চলে আয়েশী
রাস্তায় ভদ্রমতো দেখায় দাদা গিরি,
সৎকর্মে অক্ষম কুকর্মে পারদর্শী
ঝামেলা হলে কোথাও সেথা যায় উরি৷
নিশিদিন ভাবনা তার কোন সময়
কার সাথে কেমনে জট পাকানো যায়৷

               ডাকপিয়ন

নিঝুম রাতে ঐ নির্ভীক ডাক পিয়ন
এক হাতে লাঠি আর কাধে ঝোলো ঝুলে
অন্য হাতে হেরিকেন রাতভর জ্বেলে,
দেশের কর্তব্য সে করে যায় পালন।
ভয় নেই মনে কোন যাতায়াত কালে
ভয়তার এইটুকু সূর্যদয় হলে
ক্ষর তাপে দেহ খানি হয়যে দহন।

চিঠিপত্র টাকা পয়সা সোনা গহনা
আরো কত মালামাল গাঁটি বেবিয়ে,
বিরামহীন গন্তব্যে শুধু একটানা
নির্ভীক চিত্বে ছুটে চলে বুক উচিয়ে
দিনে রাতে সর্বক্ষন তার শুধু কাজ
চিঠিপত্র মালা মাল হোক তার সাজ।

           অসাধ্য সাধন

কোনো কাজে যদি কভু পরাজিত হও
ভেবোনা কিছু তাতে চেষ্টা করো আবার
দেহ মনের শক্তি কুলোয় যত বার,
মনের বালখিল্যতা দূরে ফেলে দাও
সজত্নে অভিলাশে কাজে হাত লাগাও।
দেখিবে তুমি সফল হবেই এবার
চেয়ে দেখ কাজ সব হয়েছে কাবার
তার পর সেথা থেকে তুমি চলে যাও।

অসাধ্য সাধন হলে খুশির আমেজে
সারাক্ষন ঘুরিবে উল্লাসে মন ভরে,
কষ্ট ভয় বেদনা কোনো কিছুই কাজে
বাঁধা দিতে পারবেনা চলে যাবে দূরে।
মনোযোগে করিলে কাজ বাধা সকল
বাতাসে উরে যায় হইবেনা বিফল৷

                   কুলি

ঢাকা যাওয়ার পথে দেখি কিছু কুলি
স্টেশন ঘিরে ওরা পাকিয়েছে জটলা
দাবি তাদের একটা কষ্টে সবি মেলা,
তবু কেন সজ্জনেরা চোখ রাঙ্গি তুলি
টাকা চাওয়ার দোষে দূরে দেয় ঠেলি।
অসুস্থ হলেও ঘারে পুটলি পোটলা
বহন করে ঠিক ঠাক গাড়িতে তোলা,
এসব করিতে হয় আসি জল ফেলি?

একজন কথাগুলো হাত নেড়ে নেড়ে
উচ্চস্বরে বলে আর অবশিষ্ট কুলি,
সায় দিয়ে তাতে সবাই এক নাগারে
স্লোগানে ভাপড়ি তোলে দিয়ে হাত তালি৷
শ্রমের নৈপুন্যে সদা মানের আশায়
কুলিরা এই ভাবে প্রতিবাদ জানায়।

            গ্রামের বিয়ে

গ্রামের বিয়েতে সানাই বাজনা বাজি
রং ঢং তামাসায় ঘর দোর বাড়ি
জাকজমকে পুরোধা করে তোলে ভারি,
পড়সী সকলে নতুন সজ্জায়ে সাজি
ধুম ধামে অতি ব্যাস্ত শুভ ক্ষনে আজি।
(সময় যে বেয়ে যায়) এই সূত্র ধরি
উল্লাসীত গ্রামবাসী এনে পাত্র-পাত্রী
বিয়ের পিরিতে বাসায় ডাকিয়ে কাজি।

বিয়ের পরে ভাবিরা হাসি তামাসায়
হয়ে যায় মশগুল পাত্র-পাত্রী ঘিরে,
আচলে মুখ চেপে আর চোখে তাকায়
জুটির মুখ পানে মৃদু হাসি অধরে।
মনে মনে ভাবিসাব কত ভাবে হায়
এমন সাধু জুটি মেলা বড়ই যায়।

             মাতৃস্নেহ

অন্তর ভরা ভালোবাসা মায়ের বুকে
অহনিশি ফেফে ওঠে সন্তানের তরে
মায়া মমতায় তাহা উচলিয়ে পরে,
সন্তান হারা জননী এটিকে সেদিকে
কান্নায় কাতর হয়ে ঘোরে অতিশোকে৷
কান্ত জ্ঞানহীন হৃদে শুয়ে শূন্য ঘরে
সন্তান শোকে ম্রিয় মান কেদে অঝরে
বালিশে চাপিয়ে মুখ ভূঘা পেটে থাকে।

মাতৃক্রোড় সন্তানের নিরাপদ স্থান
ঝড় ঝাপটা যতই আসুক তবুও,
মাতা সচেষ্ট রক্ষায় সন্তানের প্রান
নিজ জানের বিনিময়ে হয় যদিও।
কত আদর কত যত্ন জীবনে হয়
যতই হোক তবু মায়ার মতো নয়।

        কর্মহীন জীবন

আলসেমি মননে যে বাধি পর আশ
কর্মবিহীন জীবনে আরামে শস্যায়
অতি তৃপ্তি লভে শুধু নিদ্রা অবস্থায়,
দারিদ্র গৃহে তার ছাড়িয়ে নিঃশ্বাস
উকি ঝুকি মেরে করে ঠাট্টা পরিহাস।
সবল দেহ সত্বেও সে কৌশলে হায়
গোপন রাখে নিজেকে বিবিদসুতায়
অলস দেহে থাকে সে নিত্য উপবাস।

আরাম আয়েস ছেরে যারা ঘরবাড়ি
বিসর্জন দিয়ে চলে কাজের সন্ধানে,
তারাই মহাসুখে স্বাচ্ছন্দ ভোগ করি
দারিদ্র তেরে দেয় অতিব খুশি মনে।
কর্মের বেদনা যত যারা দেহে সহে
অভাব তাহার থেকে দূরে গিয়ে রহে।

      কবি হওয়ার ইচ্ছা

কবি হতে গিয়ে যার পর নাই চেষ্টা
করেছি প্রাণ পনে, নাই কোন আরাম
খাওয়া দাওয়া ছেরেছি নাহি বিরাম,
শয়নে স্বপনেও কলমের খোঁচাটা
লাইন করে দিয়াছি খাতার পুরোটা।
প্রতে জাগ্রত হয়ে শুধুই ভাবিতাম
লেখালেখি বোধ হয় আজকের কাম
লিখি তাই প্রত্যহ পাতা প্রায় পাঁচটা।

লেখে লেখে সর্বক্ষনে মনের আয়েশে
পান্ডু লিপি করে ফেলি পুরা খাতা লেখে,
ভুল শুদ্ধ যাইহোক লেখা হলে শেষে
প্রকাশ করতে যায় আগা গোড়া দেখে।
মানুষ পটে সদ্য মোর ভাসে ঐ ছবি
কখন যে হব আমি এক মস্ত কবি।

       কালি হাটের মেলা

দেখিনু সেদিন কালি হাটের মেলাম
এক জুয়ারী তিনটে তাশ নিয়ে হাতে
চকর বকর সেজে বসে গামছাতে,
মোর পানে চেয়ে কয় আয় শোনা আয়
দেখ বাবা এই খেলা বোঝা বড় দায়
যদি থাকে কাছে টাকা ধরো ইচ্ছা মত
লুফে নাও যে, টাকার তিন গুন জিতে?
এই বলে জুয়ারী হেসে হেসে তাকায়।

কিছু পর এক জুয়ারী আমার পাশে
এসে বলে মৃদু সরে হাতে টাকা দিলে,
“এই খানে ধরে তুমি নিশ্চয়ই তাশে
জিত হবে তোমার জাইবে লাভ লয়ে।
দেখিনু ইনি ঠক বাজ ভাবিনু হ্মোভে
খেলায় আটকাতে চায় টাকার লোভে৷

   পানির অপর নাম জীবন

হে জল কত যে সাধু উপকারী তুমি
তোমায় ছিটিয়ে ভূমে ফলায় ফসল
দিয়েছো বৃক্ষ লতা নিত্য সুমিষ্ট ফল,
কত শত সতত ঘর্মাক্ত পথ গামি
পান করিয়ে সদা আরামে পরে ঘুমি।
ভূমিষ্ট সাগর ভড়া নদী বিলে জল
তৃষ্ণা মিটিয়ে যে মোর মধু অবিকল
এ বিশাল দানকে মনে ভুলিব আমি।

জীবন বিদ্যমান যাদের দুনিয়ায়
দেহ মনে সজিবতা চাক চিক্য বেশ
জলবৈ নিতান্তই তৃষ্ণার তারনায়
মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে তারা শেষ মেষ।
পানির দয়ায় বাঁচে সকল সৃজন
তাইতো পানির অপর নাম জীবন।

               মাটি

কত বড় খাদক তুমি বল হে মাটি
লোহা, তামা, ইস্পাত যখন যাহা পাও
মরিচায় ক্ষয় করে ইচ্ছা মতো খাও
গর্ভেতে জন্ম তোমার বৃক্ষলতা সাটি
পচিয়ে যাও তাও মনের স্বাদ আঁটি
তোমাতে বানানো বাসন কোসন তাও
ধীরে ধীরে চুপি সারে নিজেকে মিশাও
এই কি নীতি তোমার বল মোরে সেটি।

অন্যায় যদি কখনো করে থাকি কোনো
নিজ গুনে তুমি ক্ষমা করে দিও মোরে,
মৃত্যু হলে পরে আমি সর্ব সুখ যেনো
নিষ্পাপ হয়ে পাই সদা শুয়ে কবরে।
তোমার পড়সে গড়া মোর এই দেহ
তোমার মাঝেই মেশে নিত্য অহরহ।

            হরিপদ (১)

হরিপদ নামে ছিল মোর এক ভৃত্য
অতিসয় তেজি সে তবুও কোন কাজে
কূট ফন্দি আটিয়ে শুধুই আজে বাজে,
মিথ্যার আশ্রয়ে সে আড়ালে গিয়ে নিত্য
মনের আনন্দে দিত হেলেদুলি নৃত্য।
নাদুস নুদুস কায়া তাঁর ভিন্ন সাজে
চলিত সচরাচর পিঠ খানি নুজে
এই তার চলন যা চিরন্তন সত্য।

সে ছিল বাড়িতে চাকরদের সর্দাক
কর্তার কোন কথা তার গায়ে লাগে না,
দাস দাসি বাকিরা সবার আবদার
স্বহাস্তে পুড়িতো কেহ বিমুখ হতো না।
বিশ্বস্ত চাকর মোর এই হরিপদ
কথায় বুঝিয়ে দিত আসন্ন বিপদ।

         হরিপদ (২)

হরিপদ নামে ছিল মোর এক ভিত্ত
নাদুস নুদুস চেহারা তার যেমন
পাপুস গুপুস খাওয়া তার তেমন,
কথাও কাজে অমিল এই চির সত্য
দেখিতে যেখায় তারে যেন এক দৈত্য৷
চলিতে পথে ঘাটে এমনই ধরন
পোশাকের বাহারে বাবুদের মতন
হেলে দুলে চলে সদা ভৃত্য মোরনিত্য।

সামান্য কিছুতে মোরে শাসায় এতই
সে যেন মোর প্রভু”ভাবখানা এমন,
পিতা মাতা ভাই ভগ্নি বাড়ির সবাই
আনন্দ পায় দেখে তার চাল চলন৷
দোয়া করি সবাই হরিপদের মত
পায় যেন গৃহে চাকর কমঠতত৷

     বৃষ্টি দিনের খেলা

মেঘের গর্জন শুনি পাড়ার সকল
ছেলে মেয়ে নেচে নেচে হর্ষ কলে রবে
উঠান বেয়ে মেতে ওঠে লাফিয়ে সবে,
লগ্ন গায়ে ছোটাছোটি আসিলে বাদল
ইচ্ছা মতো গা ভিজিয়ে করিবে গোসল,
উল্লশীত ছোকড়ার দল এই ভেবে
তা খাবে জল হায় খেলার উৎসবে
শিশু মনে বয়ে যায় আনন্দের ঢল।

বৃষ্টি হলে কিছু পর পিছল কাঁদায়
খেলার ছলে শিশুরা করে দৌড়া দৌড়ি,
হাড় জিদ যাহোক কিন্চিৎ মূলনায়
খেলা ভেঙ্গে তারা করে কাঁদা ছড়াছড়ি।
এই হলো সেই বৃষ্টির দিনের খেলা
লেখা-পড়া ভুলে কাটাইতো সারা বেলা

    স্কুল যাওয়ার ইচ্ছা

আবার যদি যাইতাম পড়তে স্কুলে
বেশ ভালই হতো তবে বন্ধু বান্ধব
কোথায় পাব তাদের নিরুদ্দেশ সব,
স্বাদ জাগে মনে মোর সকাসকি মিলে
যাইব স্কুলে, একবার সুযোগ পেলে৷
পড়ার সময় ভয়ে না থাকি নিরব,
মন থেকে মুছে ফেলে হৈ চৈ কলবর
থাকিতাম মত্ব যেন পড়ালেখা কালে।

আর কি হে আসিবে মোর- সেই সুদিন
হাতে রবে বই গায়ে পরিপাটি সাজ,
ছুটির দিনে সবাই ঘুরে সারাদিন
আড্ডায় মজিতাম ফেলে বাড়ির কাজ।
“ছাত্র জীবন সুখের” শুধু পরিক্ষাটা
ঝামেলা পাকাইত বছর শেষে এটা।

        পদ্মার স্রোত

হে পদ্মা এতই বিশাল দেহ তোমার
হেথাই এসেছো তুমি জন্মি কোথা থেকে
চলেছো কোন সুদুরে শুধু এঁকে বেঁকে
শক্ত মাটিতে গড়া তোমার দুই পাড়,
স্রোতের জোরে তুমি তা করিছো সাবাড়
যদি কোন খড় কুটো পড়ে তব বুকে
আপন মনে তাহা লহ ভাটির দিকে
এই হলো অভিনব তব কারবার।

প্রমত্তা পদ্মা তুমি বর্ষা মৌসুম কালে
ডুবু ডুবু দু-তীর যেন স্রোতের বেগে,
ভাসমান যত অথৈই সমুদ্র জলে
ডুমড়ে মুছরে নাও রাগ অনুরাগে।
ফুলে ফেঁপে গর্জে ওঠে বর্ষার ধারায়
স্রোতের বেগ কিনা বুঝা বড়ই দায়।

        কৃষকের ফসল

কৃষক ভায়া প্রাতে ধানের ক্ষেতে গিয়ে
মনের আনন্দে বেশ দেখলো দু-চোখে
মাথা নুইয়ে ধান সোনালী রং মেখে
মৃদু বাতাসের কিন্চিৎ পরশ পেয়ে
কোমরে ভর দিয়ে নাচছে দোল খেয়ে।
এই ফলন তাই নিবিড় ভাবে দেখে
কৃষক ভায়া আবেগে বসে মাটি মুখে
দোয়া মাগে হাত তুলে উচ্চশিত হয়ে।

“কষ্টের ফসল রূপে ধানের ফলন
দিয়েছো ভূমে তুমি হে খোদা দয়াময়,
ইহায় ভুগে যেন তোমার গুনগান
গেয়ে যাই আমি সদা শ্বীয় মহিমায়”।
কৃষক ফসল ফলায় গায়ের ঘামে
নেই কোনো সুখ তার সদাব্যাস্ত কামে।

             ভেলা

বর্ষাকালে নদী ভরা থই থই পানি
তীব্র বেগে দুই কূল উচলিয়ে যায়
দুষ্টু কিছু ছেলে মেয়ে আশিয়ে সেথায়,
নগ্ন গায়ে খস খসে কত কিনা জানি
বুদ্ধি আটে চুপিসারে করে কানাকানি।
স্থির হলো সকলে মিলে গিয়ে পাড়ায়
সাদ্ধা মতো কলা গাছ আনিয়ে বেজায়
খেলিবে মজা ঠাটে একটি ভেলা বানি৷

যেই কথা সেই কাজ তার পরে ওরা
কলা গাছের তালাশে ছুটে যেয়ে বাড়ি,
কারো মুখে কথা নেই বদ বেচারা রা
কেটে ফেলে কলা গাছ অতি তারা তারি।
নিমেষেই নদীর পারে নিয়ে সেগুলো
তৈরী করে বদেরা বড় একটি ভেলা ।

        লুকোচুরি

দুপুরে সেইদিন খেলতে লুকোচুরি
বাড়ি থেকে আমি গোসলের ছলনায়
বাহির হইনু গায়ে ঘাড় গামছায়,
বাড়ির পার্শে বেশ ছোকড়া যারা দাড়ি
তাদের সকলকে নিয়ে সটকে পড়ি।
বাবুদের ওই কাঠাল বাগান হায়
নদীর পাড়ে যে সারি সারি দেখা যায়
সেখানে গিয়ে মোরা খেলায় মজা করি।

খেলা শেষে দেখি মাখা ধুলা বালি গায়ে
এমন বিশ্রী তনু মোর হয়নি কভু,
স্নান সেরে তাই মায়ের গালির ভয়ে
মনে মনে জপি “মোরে রক্ষা কর প্রভু”।
বিষণ্ন চিত্যে পরে গৃহে ফিরি বা কালে
দেখায় মোরে বড় শান্ত সুবধ ছেলে।

          প্রকৃতির দান

দিন থেকে রাত আসে কোনো ঘুমনাই
একাকি থেকে কাহারও দেখা না পেয়ে
মনে মনে ভাবি শুধু বিছানায় শুয়ে,
হর্ষ কোলাহলে কত দুনিয়া বোঝাই
চলিছে সারা মুল্লুক তার সীমানাই।
খেলা ধুলায় মাতামাতি আড্ডায় গিয়ে
হলা গলা করে এক নাগারে সবাই
গল্প গুজবে সারাক্ষণ তলে মাতিয়ে৷

আবদ্ধ ঘরে মোর সতত বসবাস
বাহিরের আলো বায়ুর কিছুই বুঝিনা,
সর্বদা মনন মোর করি হা হুতাশ
বাহিরে ঘুরিতে চায় শুধু একটাক৷
শতরূপে অপরূপা প্রকৃতির দান
ইহাই দেখিতে মন করে আন চান।

         বিজলি

মেঘের গর্জন শুনে আমি হতবাক
গুরুম গুরুম ফটাস ফটাস কত
বিজলির ঝিলিক ঝড়ে অনবরত,
আধারে বিদ্যুৎ জ্বলে বেশ ঝিক ঝাক
দীপা বেলা নাই তার কিঞ্চিত দেমাক।
ফটাসফটাস শব্দে করে বাজিমাত
ক্ষনে ক্ষনে কোনো খানে হয়ে বজ্রপাত
ধীরে ধীরে থেমে যায় বিজলি চমক৷

মেঘের গর্জন শুনে যার পর নাই
অতি আতংকে আমি ভীত হয়ে যাই,
চারিপাশে যত মোর তারা সকলেই
নিরাপদে ছুটে যেন হুশ জ্ঞান নাই।
তোমার সৃষ্ট যত বিশ্বে ঝড়-তুফান
তাথেকে বাচাও মোরে হে স্রোষ্টা মহান।

           দয়াময় 

যেখানে যাই আমি শুধু তোমায় পাই
সর্বক্ষণ হৃদয় জুরে সকল কর্মে
বিছানায় ঘুমে যখন প্রত্যহ ঘুমে
স্বপনে বিরাজ কর যার পর নাই
সারা মুল্লুকে চলমান তুমি যেতাই
চিরসাথী তুমি যে মোর সদা ডানে বামে
আছো তুমি আগে পিছে অন্তরীক্ষে ভূমে
নিরাকার হয়ে অদৃশ্য রূপে বেজাই।

ইহকালে পরকালে তোমারই নাম
ছাপা থাক হৃদয়ে মোর হে দয়াময়,
অন্যায়কে রুখে নেয় সংগত কাম
করি যেন আনন্দে আমি সবসময়।
শতত কামনা মোর সৎজন সেজে
থাকি যেন মও ভুলে ধান্দা আজেবাজে।

             প্রভু

রক্ষা করো মোরে শেষ বিচারের দিনে
যদি কোনো অপরাধ আমি ইহকালে
করে থাকি কভু অজান্তে মনের ভুলে,
মাপ করে দেও প্রভু এই পাপি জনে
আমি বড় হত ভাগা নশ্বর ভুবনে।
তোমায় না স্মরি নিত্য শুধু হেসে খেলে
ঘুরেছি সারা মুল্লুক অতি কৌতূহলে
সেসব স্মৃতি আজ শুধুই পরে মনে।

আনন্দ মশ-করা হাসি-ঠাট্টা আবার
গান বাজনায় মত্ব ছিলাম সতত,
তোমাকে ভুলিয়ে হে পরোয়ার দিগার
ছুটেছিনু অযথা করিনু ইবাদত।
ক্ষমা করে দাও প্রভু বিচারের দিনে
আমি যে মহা পাতক আছি এ জমিনে।

          নলেয়া নদী

হেসে খেলে থাকি সদা নলেয়ার পাড়ে
দুই কূল ডুবু ডুবু দেখি শুধু পানি
ভয় নেই মোর কোনো সাঁতার যেজানি,
সাধ হলে কখনো ঘাড় গামছা পরে
আনন্দে একখানা সুতার জাল ধরে।
এক পাশ এপাড়ে অপর পাশ টানি
ওপারে বেধে তবে কৌশলে ফাঁদ বানি
মাছ আটকাই কত জলের ফোকরে৷

দৈনন্দিন স্নান সেরে নলেয়ার জলে
দেহ মনে নৃত্য আরাম কত যে পাই,
ফুরফুরে মেজাজে অতীব সাধহলে
খেলি আর ঘুরি বেশ তার সীমা নাই।
কোন হেতুপাড়ে কখনো না যাই যদি
সর্বদা ডাকে মোরে সেই নলেয়া নদী।

        ঝরনার জল

পাহাড়ের মাঝে স্বচ্ছ ঝরনার জল
উচু থেকে নিচুতে বেগমান ধারায়
দৃষ্টিনন্দন রূপায়নে গাড়িয়ে যায়
আকা বাকা পথ তার ধ্বনি কলকল
গান গায় এক সুরে ছল ছল হল।
এতই উপাদেয় সেই পানি যে তায়
জীবজন্তু পশু-পাখি নিত্য পিপাসায়
জঠর পুরে পরে সারে তাতে গোছল৷

সতত প্রবহমান ঝরনার ধারা
বৃদ্ধি করিয়েছে শোভা পাহাড়ের বুকে
নেচে নেচে হেলে দুলে গ্রাম্য রমণিরা
কলসিতে জল ভরে গৃহে ফেরে হেকে
ঝরনার জলপানে বেশ মজা পাই
তাইতো সর্বদা ঝরনায় ছুটে যাই।

     আষাঢ়ের বন্যা

ভাসমান মেঘ রাশি আষাঢ় গগনে
সারি সারি উরে চলে দম নাহি তার
ঝুপুর ঝুপুর বৃষ্টি ঝড়ে বেশুমার,
কর্দমাক্ত শিক্ত মাটি পিছল উঠানে
চলা ফেরা করে সবে সংকিত মনে।
নদী-বিলে থৈ থৈ পানি জলাশয়ে আর
উপচায় যেন হেন ডুবুডুবু পাড়
এযেন জলের খেলা আষাঢ়ের বানে।

জেলে গন জাল নিয়ে মাছের সন্ধানে
বেপরোয়া হয়ে ছোটে আথারে পাথারে,
দুষ্টু কতক শিশুর দল ভেলা বুনে
পানিতে ভাসিয়ে তারা হই চই করে।
নদীনালা খাল বিল ডোবা জলাশয়
আষাঢ়ের বন্যায় নব যৌবন পায়।

         ক্ষমতা দাও

আমিতো আছি সেই দিনের ভরসায়
যেদিন প্রভু তুমি অতিব দয়া করে
তোমার সৃষ্ট সকলকে সেবার তরে,
নিতান্ত ক্ষমতাবান করিবে আমায়
আমি যে রয়েছি আজ সেই প্রতিক্ষায়।
কত সুন্দর সৃষ্টি তবু তীক্ষ্ণ নজরে
দেখিতে পাই আমি যেন নয়ন ভরে
সেই ক্ষমতা দাও মোরে হেদয়াময়।

বড়ই স্বাদ জাগে মোর এ দুনিয়ায়
আছে যত সৃষ্টি তোমার সব যে তাই,
অহর্নিশি দুচোখে পরম করুনাময়
আমি যেন সুস্পষ্ট তাহা দেখিতে পাই।
হে খোদা তুমি বড়ই সর্ব শক্তিমান
যা করে তাতেই হয় সবার কল্যান ।

       কতটুকু

কতটুকু দুঃখে সুখ পাওয়া যায়
কতটুকু আখি জলে মুখে ফোটে হাসি
কতটুকু কাতরে হওয়া যায় খুশি?
এসবের হিসাব মিলানো বড় দায়
তাইতো মন মোর সদা ছট ফটায়।
আমি তাই আনন্দটুকু ধুলাতে মিমি
হরদম দুখী মনে চলি দিবানিশি
বাউল রুপী বেশে হাটে মাঠে রাস্তায়।

কষ্ট হোক তবু দুখ করি আলিঙ্গন
জীবনের প্রথমে সুখ ভুলিতে চাই,
হাশি কান্না মিলে আশা মোর আজীবন
জীবনের শেষভাগে সুখ যেন পাই।
শেষ ভালো যার সব ভালো তার এই
চিরন্তন সত্য মানগো জীবন সই।

        সাধু ব্যাক্তি

মহৎ কর্মের জন্য যদি কেহ ভাই
মাথা থেকে আজে বাজে চিন্তা সরে ফেলে
সর্বদা অসৎকর্ম দেয় দূরে ঠেলে,
তার মতো সাধু ব্যাক্তি আর কেহ নাই
সম্মান নিয়ে সে সদা বেচে থাকে তাই।
কখনো বা ওই সাধু কোনো খানে গেলে
চারিপাশে কত তারে ধরে ঘিরে ফেলে
কুশলাতি জিগায় গেয়ে যায় সাফাই।

ন্যায়ের জন্য সাধু সদা লড়াই করে
ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করে তবে ক্ষান্ত হয়,
অসাধু এতে ক্ষোভে বিস্তর পরিসরে
সাধুর ভয়ে অতিব মাথা নুয়ে রয়।
সাধুজনের মন ভালো কাজের তরে
শত ব্যস্তর মাঝেও উসখুস্ করে।

            মনের দাহ

হে খোদা কেন পাঠালে মোরে এ ধরায়
মোরে লান্ধনা গন্ধনা অপমান অহরহ
করছে সবাই নিত্য পরিবার সহ,
যদি কোথাও যাই ভালোবাসার তরে
দেখা মাত্র মোরে সবে মুখ নেয় ফিরে।
কত জ্বালা মোখ আবেগ মনের দাহ
জ্বলিতেছেনা এ বুকে দেখছেনা কেহ
কেউবা আর চোকে তাকায় ঘৃনা ভরে৷

মোর তো এ ভূবনে চাবার কিছু নাই
চাই শুধু সবার একটু ভালোবাসা,
চাই সবার হাসি মুখ আর তাতেই
তিক্ত হয়ে সবাই করে ঠাট্টা তামামা৷
হায়রে মানব প্রেম কোথায় লুকালো
তাই বুঝি একে একে সব সরে গেল।

         কি অপরাধ

কি অপরাধ মোর বল হে দয়াময়
মাতৃ পর্বে থেকে যদি ভুল হয় বৈকি
সেই ভুল টাকি মোর অপরাধ নাকি?
প্রসব পরে চুমু খাওয়ার সময়
বারে বারে মাতা মোরে কত কথা কয়।
খুকু মনি সোনা মনি মত ডাকা ডাকি
বলে আরো কত শত মোর পানে তাকি
ন্যায়কে নাও তুলে ছুঁরে ফেলো অন্যায়।

অবুঝ শিশুথেকে কিশোর হয়ে আজি
বলেছি সত্য কথা মিথ্যা বলা ছেড়ে।
হইনি অসাধু করিনি ভাওতা বাজি
নিঃস্ব হয়েছি শতত পরোপকারে।
তবু কেনো এত কষ্ট বলো দয়াময়
সুখকি পাবনা কভু এই দুনিয়ায়ক?

          অহংকার

জগতের দুর্নীতি অন্যায় অনাচার
কুলুষতা আত্মাহামিকা স্বার্থপরতা
ছলচাতুরি শত অতিব দাম্ভি কথা,
মনষ্যহীন সব সর্বদা বেবিচার
মিশে দেহে যাদের নিত্য অহংকার।
ওরা যেন সমাজের কুকর্মের হতা
কোন খানে নাই তাদের ক্ষিন নম্রতা
অবৈধ গড়ে ফের জীবন সংসার।

অহংকারই অলংকার তাদের
চলাফেরা করে তারা নিত্য বুকফুলে,
কথায় কথায় ধনরত্নের বাহার
আর বংশ গৌরবে ভ্রুকুচকে তোলে।
অহংকার যখন ধুলায় একদা
মেশে তখন তাদের দেখায় বেহুদা।

           বঙ্গবীর

হেবঙ্গবীর কেমন আছো আজ তুমি
উষলাদী জানিবার বড় ইচ্ছা হয়
বারে বারে তাই মোর সবাঙ্গ হৃদয়,
আতংকে কেপে উঠে করে পাগলামি
হতে চায় তোমা মত এক মুক্তি কামি।
সর্বদা ভাবি মনে তুমি আছো যেথায়
সালাম জানাই তোমায় গিয়ে তথায়
এই আশা মনে পুষে ঘুরি ফিরি আমি।

জীবন বাজি রেখে দেশ করেছ জয়
করনি জীবনে কভু কোনো কিছু আশা,
যুদ্ধকালে কাউকেই করনিত ভয়
দেশপ্রেম ছিল শুধু তোমার ভরসা।
স্বাধীন করেছ দেশ মুক্তিযোদ্ধা হয়ে
তাইতো ঘুরছি আজ স্বাধীনতা পেয়ে।