1
প্রত্যাবর্তন
নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশে
আসিলেন বঙ্গবন্ধু দৃঢ় মনবলে
উত্তাল জন সমুদ্রে মহাবীর বেশে
মান অভিমানে খনে খনে আখি জলে
শুধায় জনতায় কত শত অনুরাগে
“ভূত পূর্ব ক্লেশ অসহ্য নির্যাতন
ক্ষত করে দেহ মন দীর্ঘ কারা ভোগে”
সর্বশান্ত বর্ণন দূখের বিবরণ।
“এই বাংলার পূর্ণ স্বাধীনতা পেয়ে
পূরণ হয়েছে মোর চির স্বপ্ন আসা,
মুক্ত আকাশে বাতাসে আজ শ্বাস লয়ে
থাকি যেন সবাই একত্রে বাধিবাসা”।
আরও ঢের বুলি বঙ্গবন্ধু ভাষণে
দিয়েছিল আহা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে।
2.
হে স্বাধীনতা
হে স্বাধীনতা! আজ কত বছর পরে
মুক্ত করেছ মোদের দিয়েছো সম্মান
কেড়ে নিয়ে কত সহস্র সতেজ প্রাণ,
প্রচ্ছসিত বেগে এই বাংলার তরে
বীর দর্পে এসেছো মহান বেশ ধরে।
সাধমত চলি তাই মনের মতন
হাসি-খুশি খেলাধুলা যখন তখন
সারা জনম সখেতে পূর্ণ অধিকারে।
হে স্বাধীনতা! এদেশ হতে অন্য দেশে
তোমার বুকে থাকি, যখন যাই ছুটে
সভা সমিতি বা সবার সামনে বসে
সর্বজনে শুধাই মোরা স্বাধীন বটে
রক্তের বদলে ভূবনে দিয়েছো অতি
সুন্দর এক নাম বাঙ্গালী শ্রেষ্ঠ জাতি।
3.
মরহুম আশরাফ
তুমি চলে গেলে ভাই আশরাফ কোথা
দিছো মোদের শিক্ষা গর্ব করার মত
বুক ভরা ভালোবাসা হাসি ঠাট্টা শত
শিখিয়েছো চলার সতত সত্য কথা।
দিলে যে আদর সোহাগ স্নেহ মমতা
দেশে দশে সদা করি শির অবনত
কর্মে ব্যস্ত ছিলে তথা চীর অবিরত
তাইতো বলে গেলে মহান জননেতা।
দোয়া মাগো নেতা তুমি গিয়ে পরপারে
সূখ নিয়ে থাকি যেন মোরা জনগন
খুশির বন্য ভেসে বেড়াক প্রতিঘরে
আনন্দে ভরে উঠুক মোদের জীবন।
দোয়া কর প্রিয় সকাল বিকাল সাঝে
সেরা যেন হই আমরা বিশ্বের মাঝে।
4. শাহাদাত
আজ তব চুয়াল্লিশতম শাহাদাতে
খালি পায়ে পুষ্পমালা এই মহাশোকে
করিদান কবরে সবাই একে একে,
চোখের জলে ব্যাস্ত মাজার জিয়ারতে
আকাশ বাতাস মূখর মায়া কান্নাতে।
দিয়েছো দেশ এই অধম বাঙ্গালীকে
নিয়েছো শুধু কষ্ট গ্লানি চাপিয়ে বুকে
জেলের ঘানি টেনেছো উঁচু মাথা পেতে।
মৃত্যু বার্ষিকীতে মোদের হউক উক্তি
হে জাতির পিতা তোমার আদর্শ মনে
ধারন করে তবে শোককে করে শক্তি
চলি যেন সাহসে সদা বিশ্ব ভূবনে।
জেগে উঠ বঙ্গবন্ধু প্রতি বতসরে
মোরা আছি তব সোনার বাংলা জুড়ে।
5.
কারাভোগ
কতো নদী কতো সাগর উত্তাল সিন্ধু
পাড়ি দিয়ে মনে অসীম সাহস করে
তেজ দীপ্ত বেগে আসলেন বঙ্গবন্ধু
বীরত্ব গাথা হৃদে এ বাংলার তরে
হৃদ পিণ্ড দেহ তার শুষ্ক হয়ে যেন
ললিত কন্ঠে ভাসে যত দুখের কথা
“নির্ঘুম কারাবাস আরাম নাই কোন
দেহ মনে জ্বালাতন কতো কষ্ট ব্যথা।
চরম জুলুম সহে আমি অবশেষে
হায়নাদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে
এসেছি বাংলায়,দেশকে ভালবেসে
ফাঁশি কাষ্ট হতে অতি হুংকার ছেড়ে,
দেশ আজ স্বাধীন,মোরা মুক্ত সকলে”
শুধায় বঙ্গবন্ধু এসব অশ্রু ফেলে।
6. বীরঙ্গনা
হে বাংলার সাহসী বীর বীরঙ্গনা
সালাম জানাই শতত হেন বিরলে
মাথা রাখি মোরা তব স্নিগ্ধ পদতলে
চৌকস সুশৃঙ্খল কত দুরন্তপনা
নির্ভিক হৃদয়ে তব জাগ্রত চেতণা।
রোগে-শোকে ম্রিয়মান কায়ায় সকলে
ক্ষত-বিক্ষত করেছো মেলা যুদ্ধ স্থলে
কেমন ছিলে তোমরা চিরমুক্তমনা।
ওহে বীর-বীরঙ্গনা তব নাম হৃদে
প্রেমের সুতায় গাথি সর্বক্ষনে স্মরি,
স্বাধীন নিবাসে থাকি ঘুরে আহ্লাদে
সোনার বাংলায় সুখে জীবন গড়ি।
উজ্জল মহান সৃষ্টি তব অবদানে
শত সালাম জানাই মোরা সসন্মানে।
7 বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণা
হে বঙ্গবন্ধু তোমার অনুপ্রেরণায়
সততা সৌজন্যতা মনে ধারন করে
অন্যায় কূকর্ম মিথ্যা সর্ব পরিহারে,
শিখেছি পথ চলতে এই বাংলায়
বুক ফুলে সর্বদা যেন উচু মাথায়।
শিখেছি মনে আরো যে নিরাহংকারে
ভালবেসে রাখি যেন বুকের ভীতরে
সারাজনম ব্যাপী বাংলার সবায়।
কতো সুন্দর বুলি আচার ব্যাবহার
শিখেছি মমত্ববোধ,ধৈর্যবান হতে,
শিখেছি দেশের প্রেম জনসেবা আর
দূখী মানবের কষ্ট ভাগ করে নিতে।
মিলেমিশে একত্রে তোমার আহবানে
সজাগ হয়ে আছি আজ জনকল্যাণে।
০৮
বঙ্গবন্ধুর চাওয়া ও মোদের শপথ
চেয়েছিলে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা
অসহায় দুখী মানুষের মুখে হাসি
চেয়েছিলে তুমি কৃষক শ্রমিক মিশি
মাঠে কর্ম নৈপুণ্যে ফসল ফলি মেলা
মাচা ডোলে তুলে আনন্দে খেলিবে খেলা
জন্মভুমে থাকিয়া কেহ নাহ প্রবাসী
পরিচয় দিবে যে খাঁটি বাংলাদেশি
এ আশায় নেতা কাটিয়া দিত বেলা
যতদিন মোরা তোমায় উত্তর সূরী
বেচে আছি বাংলার দোয়া কর শুধু
শপথ নিলাম আজ হাত মুঠো করি
আশা পুরিবে তোমার ওগো বঙ্গবন্ধু
গরিব দুখী একত্রে এই বাঙলারে
গড়ে তুলিব মোরা শান্তি সুখের নীড়ে।
৯
ইস! যদি হতাম
স্বপনে জাগরণে সদা ভাবনা মোর
যখন যেভাবে থাকি ভাবি মনে কত
ইস! যদি হতাম বঙ্গবন্ধুর মত
অসামান্য ধীমত্যায় নেতৃত্ব তুখোর
জন সভায় যার কণ্ঠে বিশেষ জোর
যার ডাকে ছেলে বুড়ো পথে শতশত
কৃষক শ্রমিক সমেত মিশিয়ে যেত
জন স্রোতে,নেতার হাঁক শোনার পর
শুধু পুরুষ নও তুমি এ বাঙলায়
মহাপুরুষ রুপি জন্ম হইয়েছ ধন্য
কত জন বা আছে তোমার মত প্রায়
উৎসর্গ করে জীবন দেশের জন্য
ধন্য হব-আমি যদি পারি কোনো মতে
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিন্দু মাত্র নিতে।
১০
পশ্বিমা দালাল
হায় বঙ্গবন্ধু তুমি কত সত্য বানী
সোনাইলে, দেশের কথা দশের কথা
দুখী জনের ব্যাবাগ দুখ কষ্ট ব্যাথা,
বোঝালে আরও মোদের কাছে ডেকে আনি
সোনার বাংলার পরাধীন কাহিনী।
“ভৃত্য রুপে রাখে ওরা-নইলে অন্যথা
লেশ মাত্র ভুলেই মোদের নিত মাথা”
এই বলে মুজিব মোছে চোখের পানি
হিংস্র দানব মতো পশ্চিমা দালাল
বাংলায় চলে যেন কারায় রাক্ষসী,
পদতলে পিষ্ট করে হইয়া মাতাল
অবুঝ বাঙালীরে বানায় দাস দাসী।
স্বরন মনা জনগনে পশ্চিমা শক্তি
নির্বোধ ভেবে সদা তাদের চায় ভক্তি।
১১
যদি জিজ্ঞাসা করি
ওহে বাঙালি! আমি যদি জিজ্ঞাসা করি
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কারা বঙ্গ তটে
আনন্দে ব্যাস্ত ছিল সর্বদা লুটপাটে,
টাকা-পয়সা সোনা-গহনা ভুরি ভুরি
নিয়ে গেছে নিজ গৃহে সব করে চুরি।
যদি জিজ্ঞাসা করি ওরা আজ কোনটে?
পশ্চিমা ঘাতকদের সাথে হাত এটে
পুরে ছিল যারা বাংলার ঘর-বাড়ি।
যদি জিজ্ঞাসা করি এতদিন পরেও
তাদের কি আছে বাস-মুক্ত বঙ্গ ভূমে?
ভূতপূর্ব অন্যায় স্বীকার না করেও
বাংলায় তারা কেন ঘুরছে আরামে
কে দেবে উত্তর বল কোন সে বাঙালি
ভয়ে শঙ্কিত না হয়ে দম্ভে বুক ফুলি।
১২
হুঙ্কার
হায় নেতা কেমন তোমার ভালবাসা
দেশের জন্য কত জেলের ঘানি টানি
দেহের রক্ত টুকু করেছ সব পানি,
কবর সেল পাশে হাসি মঞ্চ ঘেষা
নিত্য কষ্ট ভোগো সেথা থাকি বন্দি দশা,
এরই মাঝে শত্রুরা খাতা পত্র আনি
চাপায়নে তায় “লিখো পরাজয় মানি”
আজি হয়ে বাংলা পাকিস্তানের পোষা
রাঙ্গা চোখে বঙ্গবন্ধু খাতা খানি কেড়ে
বীরদর্পে হুংকারে দেয় ছিড়ে ফেলে,
চোর-বাটপার বলে অগ্নিরুপ ধরে
অন্ধকার প্রকোষ্ঠ নেতা কাপিয়ে তোলে।
হুমকি ভয় শত অস্ত্রের ঝনঝনি
কোনো কিছুই নেতাজি তোয়াক্কা করেনি।
১৩
বঙ্গবন্ধুর পণ
হায়রে দেশপ্রেম বঙ্গবন্ধু তোমার!
নিষ্ঠূর খান সেনা করি মান হরণ
আনন্দ চিত্তে তোমায় কারায় প্রেরন
করিয়াছে, যখন তখন বারবার
পরাধীন বাংলা নিশ্চিহ্ন করিবার।
উপেক্ষা করে সব রক্ত চক্ষু শাসন
মনেপ্রানে সেজেছ সেধেছ “হয় হোক মরন
তবুও ছিনিব বাংলার অধিকার”।
বঙ্গবন্ধু তোমার কেমন মায়াটান
সুখের গৃহ ছারি দেশ রক্ষায় তুমি,
জীবন যৌবন সব করি অবসান
স্বাধীন করিলে হায় এই বঙ্গভূমি।
কেমন তোমার প্রেম বাংলার সনে
প্রিয় নেতা হয়ে তাই আছো জনমনে।
১৪
মুক্তির ভাবনা
হায়রে প্রেম! জিবনে কত কষ্ট সহে
ভোলো নিত কভু বাংলার মানুষকে
ভালো বেসে সদা চেপে ধরে বুক
ভ্রাতৃ হৃদে হাস্য তার গুরু সাজি নহে
বলে বঙ্গবন্ধু “দেশটা মোদের বাহে,
সবাই মিলে এসো বাংলার মাটিকে
মুক্ত করে তেরে দিই জল্লাদ শত্রুকে”
এমন তরো কথন বঙ্গবন্ধু কহে।
হাটে মাঠে গৃহে যখন যেখানে যায়
মাথায় শুধু সর্বদা মুক্তির ভাবনা,
হাত ধরে সবার যখন যাকে পায়
শুধায়, “দেশ টাকে কি মুক্ত করবানা”?
এভাবে বঙ্গবন্ধু সারা মুল্লুক ঘুরে
সমগ্র বাঙালিকে নেয় আপন করে
আহ্সান হাবীব
১৫
স্বাধীনতার মোহ
বঙ্গবন্ধু তুমি বাংলাকে ভালোবেসে
সুখের চলন ফূর্তি পরিত্যাগ করি
অদ্ভুত প্রেমের মোহে রাজঘর ছাড়ি,
দৃশ্যমান সুশ্রী একজন নেতা বেসে
পরাধীন জাতির সাথে গিয়াছ মিশে।
লক্ষ তোমার স্থির হায়নাদের তাড়ি
স্বাধীন বাঙালি রুপে ফিরে গিয়ে বাড়ি
মুক্তির আলো জ্বালাবে আনন্দ-উল্লাসে।
অন্যায় দূর্নীতি ত্রাস অপরাধ যত
উপরে ফেলে গরাবে সোনার বাংলা,
সবার মুখে হাসি দেখবে মন মতো
এ আশায় তোমার মন করে উতলা
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ দুনিয়ায় ১৩
স্বগর্বে চিরকাল রবে উঁচু মাথায়।
১৬
ছাত্রনেতা খোকা (১)
স্কুলেতে গিয়ে দেখে মাষ্টার মহাশয়
মধ্য মাঠে বসে যেন হয়ে গুড়ি সুড়ি
চারপাশ ঘিরে রয়ে সব কর্মচারী,
কী-বা দোশে শিক্ষা গুরু বকে অতিশয়
“কর্মচ্যুত করব” বলে শাসে বেজায়
একপাশে দারি থেকে কান পেতে আড়ি
আদ্যো পান্তো শুনে খোকা চোখ করে ভারী
কর্মচারীর মুখে শুধু তাকিয়ে রয়।
গালে হাত দিয়ে খোকা ক্লাসে শুধু ভাবে
কোনো কিছুই তার ভালো লাগেনা আর,
কর্মচারী ওদের এখন কী যে হবে
ভেবে তাই সময় করে দেয় সাবাড়।
ছুটির পর কর্মচারী- ওদের নিয়ে
শিক্ষকের কাছে খোকা মাফ চায় যেয়ে।
১৭
ছাত্রনেতা খোকা (২)
কর্মচারী যা ছিলো সব করে ছাটাই
ক্ষমতার দাপট দেখায় স্কুলে আসি
উৎফুল্লে চলে গুরু মুখে সদা হাসি,
মনে তার ভাবখানা “ঝামেলা ছাড়াই
নিয়োগ দিয়ে অন্যকে করিব কামাই।
বিদ্যা বুদ্ধি যাই থাক” ভাবে অহর্নিশি
“প্রার্থী হবে যিনি টাকার অংকে বেশি
চাকরি পাবে তিনি নিয়মমতো তাই”।
ছলছল নেত্রে যত সব কর্মচারী
ব্যাকুল হয়ে ওরা একত্রে জোট বেধে,
বিমর্ষ চিত্তে তারা যায় খোকার বাড়ি
সংসারের বোঝা যেন নিয়ে স্ব-কাধে।
অতিব ক্লেশে ওরা সুধায় বিবরণ
খোকা শুনে করে যে অগ্নি রূপ ধারণ।
১৮
ছাত্রনেতা খোকা (৩)
দ্রুত পদে খোকা হাটিয়া স্কুলেতে এসে
খোঁজ নেয় সকলের করে তারাহুরো
প্রশ্ন রাখে কত চোখ দুটো তার বড়,
(পড়ুয়ারা পড়ায় ব্যাস্ত সকল ক্লাসে
শিক্ষা গুরু আড্ডায় মাতি কক্ষতে বসে।
কর্মচারী সব বিদায়) এমন তর
পশ্চাতে একজন হইয়া জড়োসড়ো
জানিয়ে খোকায় দূত প্রস্থান করে সে।
(কর্মচারীর চাকরী নাই) এ কথায়
বজ্রপাতে যেন মাথায় গরম ধরে,
বন্ধুবান্ধব যারা তাদের নিয়ে হায়
ত্বরিৎ বেগে যায় শিক্ষা গুরুর ঘরে।
অনুনয়-বিনয়ে খোকা নরম শুরে
বলে (কর্মচারীর চাকরী দিন ফিরে)।
১৯
ছাত্রনেতা খোকা (৪)
কর্মচারীর “কর্মচ্যুতি”- তা প্রতিরোধে,
বিক্ষুদ্ধ ছাত্রছাত্রী সম্মিলিত সকল
খোকার নির্দেশে স্কুল করিয়া অচল
ক্লাস রাখে বন্ধ, হরতাল অবরোধে।
শিক্ষাগুরু হেন মান অপমান রোধে
খোকাকে ডাকি তাকি তার উপরিতল
“উদ্ভুদ পরিস্থিতি দিতে হবে সামাল”
বলে এই তাকে গুরু শত অনুরোধে।
“ছন্ন ছড়া জীবন বড় কষ্টের” এই
খোকা তা বারবার শিক্ষককে বুঝায়
এসব শুনি তুষ্ট হয়ে গুরু মশাই
কর্মচারীকে কাজে যোগদান করায়।
“ভাগ্যিস! খোকার মতো নেতা ছিল ভালে”
এই কথা সব মিলে এক বাক্যে বলে।
২০
ছাত্র নেতা খোকা (৫)
শিক্ষকেরা স্কুলে খোকার প্রসংশায়
পঞ্চমুখ; কর্মচারী সব ঐক্যতানে
মুগ্ধ হয়ে ব্যস্ত যেন প্রচারাভিযানে
“খোকা সদৃশ নেতা মেলা বড়ই দায়
কোমল হ্রদয়বান সে দয়া-মায়ায়
বিপদে পতিত যদি কেহ কোনখানে
স্বকর্ম ফেলে নেতা দ্রুত গিয়ে সেখানে
কৌশল করে সেথা ভুক্ত ভোগী রক্ষায়”।
শিক্ষকগণ সানন্দে অতি গর্ব করে
নিয়ম মেনে খোকা এই স্কুলে আসায়,
“শিক্ষকাজীবন যে স্বার্থক মোদের ওরে
ওর মতো সৎ ছাত্র কে কোথায় পায়”।
খোকায় ডাকি গুরুরা হাতে হাত এ্যাটে
সাফাই গায়- “সত্যিই তুমি ছাত্র বটে।
২১
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ
হিমালয়ে রুপ ধরি তুমি সভাস্থলে
নির্নিমেষ চোখে ভাবুক অন্তরে এসে
অগ্নিল চাহনে হেন সভ্য মাঝে বসে
“যঘন্ন বর্বরোচিত নরপিশাচ কূলে
অতর্কে হামলা চালি স্বীয় বাহুবলে
তাড়িয়ে দেব বঙ্গ থেকে এই প্রয়াসে
ঐক্যবদ্ধ সদা রব” উক্ত সমাবেশে
এ সমস্ত তুমি সবাইকে কয়ে দিলে।
কেমন হৃদয়ে স্বপ্ন তোমার, সতত
সচেষ্ট ছিলে তুমি মুক্ত করিতে দেশ,
বাংলা ঘিরে পশ্চিমা দুশমন যত
তারাই তে ওদের করিতে হা হুতাশ।
“অহংকার মোদের মাতা জন্মভূমি”
হাত ধরে সকলের বুঝায় ছিলে তুমি।
২২
বুড়িমার চাদর
খোকা বলে “বুড়িমা! কেন প্রচন্ড শীতে
চৌদিকে তুষার ঝড় বড্ড হিম বায়ে
বসে আছো ক্ষুন্ন মনে বস্ত্রহীন গায়ে,
জন মানবহীন এই গাছ তলাতে
কেহকি নাহি আপন তোমার ধরাতে”?
জিগায়ে খোকা স্বীয় চাদর খানি দিয়ে
নিজ হাতে বুড়িমার শরীর মুরায়ে
তুলে নেয় যত্নে তারে বাড়ি পৌছে দিতে।
কে “তুই বাছা হেতা কি তোর পরিচয়
থাকিস তুই কোথায় জন্ম কোন গোত্রে”?
নানা রকম প্রশ্ন বুড়ি খোকাকে কয়
কম্পমান শীর্ণ কায়ে ছল ছল নেত্রে
অভাগীনির অশ্রুসিক্ত নয়ন দেখে
জলের স্রোতে বয়ে যায় খোকার চোখে।
২৩
বীর
হে বীর এতই তব দৃঢ় মনোবল
যুগে যুগে বন্দিসালে হয়ে কারাবাস
নির্যাতনেও এক করুন ইতিহাস,
চর্মে ঝিলিক চমকে মুখে বাকানল
তপ্ত তনু তার সহে অসহ্য ধকল।
উর্ধ্ব মুখে চাহি সদা ছারি দীর্ঘ শ্বাস
বাংলা মুক্ত হবে এই সতত আশ
কারায় মহাবীর তা ভাবে অনর্গল।
কত বীর এলো গেল মুজিবের মতো
আর কি কাহাকেও বিশ্বে দিয়েছে প্রভু?
শত্রুদের কবলে জেল খানায় রত
তবু পরাজয় শিকার করেনি কভু
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী হয়ি
সুখে থাকো বীর বাংলায় কালজয়ী
২৪
বাংলার রাখাল
বজ্র কন্ঠে অগ্নি বকে জানো কি তিনি কে?
এলো কেশি চোখে চশমা সুঠাম গায়ে
জামার আচ্ছাদন কোট উপর দিয়ে,
খালি পায়ে কভু চাদরে নগ্ন গা ঢেকে
খুঁজিয়ে বেড়ায় সে সোনার বাংলাকে।
গ্রাম হতে গ্রাম বন্দর নগর বেয়ে
নব উদ্যোমে “বাংলার রাখাল” কয়ে
সহাস্যে পরিচয় দিত সদা নিজেকে।
“বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান”
ইনি হলেন তিনি নাম সবার জানা,
বিশাল দেহে দয়াল মনে সে মহান
দিয়েছে মোদের জাতি দেশের ঠিকানা।
ভুলিতে পারিবনা আমরা কোনদিন
স্বাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধুর ঋন।
২৫
এক বৃদ্ধের দোয়া
সভান্তে বঙ্গবন্ধু মঞ্চ থেকে যখন
রুঢ় চিত্তে জন মধ্যে বীর পদক্ষেপে
আসিয়া দাড়ায়-মনে ক্ষোভানল চেপে,
জনতার কল্ললে ময়দান তখন
করতালে মুখরিত স্লোগান ভীষণ।
এসব শুনি বঙ্গবন্ধুর বুককেপে
ক্ষনে ক্ষনে ভেবে মন উঠে ফুলে ফেপে
এ যে মহা নেতার চিরায়ত ধরন।
হেন কালে এক বৃদ্ধ অতি সন্তর্পণে
শুধায় নেতার বেশ হয়ে জড়ো সড়ো
“তোমার কথা বাবা লোকে বেজায় শোনে
তুমিই দেশকে স্বাধীন করিতে পারো
দোয়া মাগী সর্বদা শক্তি সাহস দিয়ে
দিত পার যেন মুক্তি মোদের নির্ভয়ে”।
২৬
মুজিবের জন্ম
হায় খোদা! কেন তুমি এত দিন পরে?
পাঠাইয়া দিলা পরাধীন সূর্য তলে
অন্ধকারাচ্ছন্ন বিভীষিকা ময় স্থলে,
বিপন্ন বাংলার মুখ উজ্জ্বল করে
শৃঙ্খলিত রুদ্ধ জাতি মুক্ত করি বারে।
অসীম সাহস শক্তি বেঁধে রিক্ত দিলে
মুজিব নামে তারে বাংলায় পাঠালে
দস্যীপনার কবল থেকে তা উদ্ধারে।
ইস! যদি মুজিবের আগে জন্ম হতো
শ্যামল প্রকৃতির রূপসী বাংলায়,
যুদ্ধ করে বাংলাদেশ ভাগিয়ে নিতো
বঙ্গবাসী সব মিলে সেই জামানায়।
শেখ মুজিব বাংলার প্রান, স্বাধীনে
সমগ্র জাতি লরেছিলো তার অধিনে।
২৭ ( সমস্যা)
আদর্শ
মুজিব তোমার আদর্শ হৃদয়ে ধরি
সর্বদা সর্বক্ষেত্রে দেশের মান সম্মান
সুবিশাল দেহে তত্ত তাহার সমান
সর্বক্ষনে নিয়ে চলি মাথা উঁচু করি
শয়ণে স্বপনে তব কথা কাজ স্মরি
ভাবাদর্শ স্নেহ যত দেহ মনে যেমন
সদা করিত মনে বিবেগ দংশন
আমি যে শক্ত এক মুজিব অনুসারী
যতদিন রবে জীবন তোমার স্মৃতি
মনে আঁকি সদা থাকব জন সেবায়
বিপদে পড়েও কভু মোর সত্য নীতি
উর্বর মস্তিষ্ক থেকে সরিয়ে না যায়
মুজিবের আদর্শে যেন চলতে পারি
এই হোক প্রত্যাশা সারা জনম জুরি
২৮
বাংলার সাহসী জোয়ান
উদ্দীপ্ত যৌবন পূর্ন বেগমান তেজে
দূর্ভেদ্য প্রাচীর দূর্গ ভাঙ্গি চুরমার
নব যৌবনে সর্বদা করি ছারখার,
নওজোয়ান সব দেশের কর্তা সেজে
একত্রে সকলে আকাশ পাতাল খোঁজে।
বাধা বিপত্তি যত অন্যায় অত্যাচার
রুখে দেয় জনতা ছাড়ি হুঙ্কার
দুর্বলে সবল করে খুশির আমেজে।
দেশ বা দশের ক্রান্তিকালে
অজয় কে জয় আর অসাধ্য সাধনে,
জীবন বাজি রেখে ওরা সদল বলে
ঝাপি পরে বাংলার সমস্ত জোয়ানে।
অসীম মনোবলে ধৈর্য ধারন করে
জান খোয়ায় কত জনগনের তরে।
২৯
স্বাধীনতা
প্রত্যুষ প্রাক্কালে দেখি সূর্যদয় পরে
বাংলার নৈসর্গি রুপ স্বাধীনতা
আকাশ বাতাশ ভেসে দূর্বার বেগে তা
চলছে নির্বঘ্নে কত দূর-দূরান্তরে
যেন এক পুলকিত পঙ্খির মতো উরে
নিশি কালে যখন মুদি নয়ন পাতা
স্বপ্নে দেখি তখন মোদের মুক্তিদাতা
বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুরে
স্বাধীনতা-তুমি কিন্তু মুজিবের দান
যেওনা কোথাও কভু বাংলাকে ছেড়ে,
তোমার জন্যি বঙ্গবন্ধু দিয়েছে প্রান
ঘাতকদের বুলেট বিদ্ধে অকাতরে।
স্বাধীনতা আজ তোমার সুফল দাও
মন থেকে সবার বিদ্বেষ তুলে নাও।
৩০
খোকার ভাবনা
শুয়ে বসে একা খোকা শুধু ভাবে
কত দুখী ছড়িয়ে আছে এই দুনিয়ায়
কত কষ্টে তাদের দিনাতিপাত হয়,
সুখ তাদের কপালে কখন যে হবে
আরাম আয়েশে হর্ষে পেট পুরে খাবে
এই চিন্তা ঘুরে ঘুরে খোকার মাথায়
কাজ কর্মে নিদ্রায় সারামনে বেড়ায়
উর্বর মস্তিষ্কে তথা স্নায়ুর প্রভাবে।
দুখীর গৃহে যখন সুখ চলে আসে
স্বপ্নের মাঝে বিভর হয়ে তাই দেখে,
খোকা তখন চমকে মনের উল্লাসে
জেগে এদিক-ওদিক চাহে হাসি মুখে।
দুখী জনে সুখী দেখে খোকা খুশি মনে
আনন্দে নেচে চলে সেই সকল সনে।
৩১
স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু
তুমি কি বন্ধু আছ ওই নিল আকাশে
চন্দ্র সুর্য গ্রহ নক্ষত্র তারকা হয়ে
স্বাধীন বাংলায়, আলোক রশ্মি দিয়ে
হয় তো বা অদৃশ্যমান বাতাসে মিশে,
বাংলার আনাচে কানাচে অনায়াসে
ঘুরে চলেছ, চুপি চুপি রিক্ত হৃদয়ে
দেখেছ আহা কত দুই নয়নে চেয়ে
সুনির্মল স্নিগ্ধতায় বাংলা যে হাসে।
উন্নয়নের জোয়ারে যাচ্ছে দেশ ভেসে
তুমি কোথায় দেখে যাও জীবন মান,
বিকশিত বঙ্গবন্ধু তোমার আশিষে
নব উত্থানে আজ বাংলা চলমান।
কৃষক শ্রমিক তোমার এ বাংলায়
হাসি ফুটে উঠে তাদের তোমা কৃপায়।
৩২
৭ই মার্চের ভাষণ
পল্টনে সেদিন বাংলার প্রিয় নেতা
দৃঢ় চিত্তে পদব্রজে বুক উঁচু করি
চতুর্দিকে চক্ষু নেড়ে মুক্ত মঞ্চে দাড়ি
ডানে বায়ে উত্তেজিত শত কর্মী নেতা
সম্মুখে তার স্লোগানে উত্তাল জনতা
পশ্চাতে হায়নার দল বন্দুক ধরি
তাক করে দারিয়াছে ওরা সারি সারি
হেথা নেতা বজ্র কন্ঠে দিলেন বক্তৃতা (সংযুক্ত অক্ষর)
ছোট বড় ময়দানে শিশু দোলনায়
সাতই মার্চের এই অগ্নি ঝরা দিনে,
বাউলি ফুলে আজ রক্তের তারনায়
শিউরে ওঠে গা নেতার ভাষন শুনে।
জয় বাংলা স্লোগানে বাউলি সকলে
সমবেত কন্ঠে তারা মাঠ কাপি তোলে।
৩৩
স্বাধীনতার ঘোষণা
পল্টনে সভায় আশি বাংলার ভ্রাতা
তেইশ বছরের অত্যাচার যন্ত্রণা
সহস্র প্রকার দুঃখ কষ্ট বেদনা
জন সমুদ্রে উপস্থাপন করিয়ে তা
সুনলিত কন্ঠে বাঙ্গালি জাতির পিতা
শত ভারাক্রান্ত চিত্তে সকল বঞ্চনা
একে একে গুছিয়ে সব করি বর্ননা
ঘোষণা দিলেন বাংলার স্বাধীনতা
আবেগে উত্তেজনায় দেশ ভালো বেশে
সভায় স্থলে উপস্থিত জন সমাগম
দেশপ্রেমে উদ্ভূদ্ধ হয়ে মুক্তির আশে
পননেয় মনে যেন হায়নার জম
হই হই রই রই ধ্বনি তথা মিশে
আকাশ পাতাল কাপায় এক নিমিষে।
৩৪
দেশের প্রাণ
হে বাংলার সাহসী যুবক সন্তান
গোমড়া মুখে না থেকে হাত পা নাড়াও
আলস্য ত্যাগ করে শরীরটা ঝাকাও
দেশ গড়ার যোগ্য সময় যে এখন
জন গন নামে তোমরা দেশের প্রান
আনন্দ কোলাহল এসব ভুলে যাও
দেশের কাজে সকলে মনযোগী হও
তবেই হবে দেশের সার্বিক কল্যাণ
অসহায় হয়ে দেশ ভাবে অতি দুখে
গর্ভেতে ধরিনু কত জন সাধারণ,
যৌবনের তারনে চলে পরম সুখে
হেলে দুলে শতত ওরা যুবক গন।
যে দেশে কর্মে লিপ্ত সদা সকল যুবা
সে দেশের উন্নতি রুখিতে পারে কেবা।
যৌবনের তারনে যখন অতি সুখে
হেলে দুলে চলে সদা সর্ব যুবা গন
অসহায় ভাবে দেশ তথা বড় দুখে
গর্ভে ধরিনু কেন এত অসচেতন
(শেষের ৪ লাইন)
৩৫
জন্ম শতদিন
আজ পূর্ণ হলো তব জন্মশত দিবা
পথ চেয়ে বসে আছি আজিকার তরে
শত সালাম জানাই মন প্রান ভরে,
বঙ্গবন্ধু হায় তোমার মানব সেবা
স্মরণ করি ধন্যি আজ আমরা সবা।
মোরা সকলে এ দিনে তোমার কবরে
দোয়া মাগি হাত তুলে পুষ্প দান করে
সুখে থাক ওপারে ওগো জাতির বাবা।
মুজিব তুমি বাঙালিরে করেছ সেরা
বিশ্বের মাঝে এক নব্ব সাহসী বীর
অস্ত্র ধরে লড়াই করে দেশেতে এরা
ঘুরছে স্বাধীন হয়ে উঁচু করি শির।
লাল নীল রঙ মাখি পতাকা আকাশে
তোমা বদৌলতে হেন উড়ে চলে হেসে।
৩৬
বিশ্ব নেতা
শুধু বাংলা নয় জগত ময় আজি
বিশ্ব নেতা রুপে হেনো সকলের কাছে
অনন্ন তিনি এক! মহা মানব সাজি
পাহাড় সমগুনে অমর হয়ে আছে।
আকাশে বাতাসে উত্তাল সাগর জলে
ভেসে বেড়ায় সদা তার বড্ড সুনাম,
পথে ঘাটে মাঠে সর্বজন কোলাহলে
শুধুই জঁপে মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম।
সুষীত যে জন বিশ্বে অতি ক্লেশে রয়ে
বেদনা হতো মনোনে দুঃখের সাগরে
দেখি তাহা বঙ্গবন্ধু মর্মাহত হয়ে
জীবন সপিঁয়ে দিতো তাদের উদ্ধারে
শোষিতদের শোষকের কবল থেকে
মুক্ত করে বঙ্গবন্ধু নিত তুলে বুকে।
৩৭
১৫ই আগষ্ট
আজও ভুলিতে পারিনা তাদের স্মৃতি
ঘাতকের বুলেটে সেই ভয়াল রাতে
দেশের জন্য জাতির জন্য বুক পেতে,
হাসি মুখে যারা দিয়েছিল আত্তহুতি
ইতিহাসে এ এক নির্মম চির সত্যি।
এত দিনেও ঘাতক এই বাংলাতে
ঘুরিছে সবখানে শুধু সুযোগ মতে
ধনে মানে জানে দেশের করিতে ক্ষতি।
হে বাঙালি যদি সুখে থাকিবার চাও
ওদের মেরেছে যারা বঙ্গবন্ধু সহ,
সেসব ঘাতকে এক্ষনে চিনিয়ে নাও
তারাও দেশ থেকে ঘৃনায় অহরহ।
মনে পরে আজ কত মহা দুখে কষ্টে
বাঙালীরা কাতর পনেরই আগস্টে।
৩৮
বিশ্ব বন্ধু
তুমি আজ শুধু বঙ্গবন্ধু নও তবে
বিশ্ব বন্ধু রুপে বিশ্ববাসীর নিকটে
আদর্শবান হয়ে আছো মানসপটে
অনেকেই নিজেকে তোমার মতো ভাবে
অনল বর্ষী বক্তা কখন সেজে হবে?
ওহে বন্ধু তুমি কোথায় গিয়েছ ছুটে?
দেখি যাও আসি এই বাংলার তটে
কেমনে ঘুরছি মোরা ধরাতে সগর্বে?
ভুবনে অবহেলিত দুখীজন যারা
দুস্থ মানবেতর জীবন কষ্ট তাতে,
অসহায় হয়ে এদিক সেদিক তারা
খোঁজে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাকে পেতে।
দুখী মানুষের মুখে হাসি বারবার
ফোটাতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন তৎপর।
৩৯
শিশু খোকা
খোকা নামে জন্ম লইয়া টুঙ্গিপাড়ায়
চারিপাশে ছুটে চলে যারা অতি দুখে
কংকাল দেহি শীর্ন শিশু দল দেখে
অজান্তেই অশ্রুঝরে চক্ষু সীমানায়
ক্ষুন্ন মনে ভাবো তখন কি করা যায়?
হাড্ডিসার দেহে যারা সর্বক্ষনে রুখে
খাবার দিয়েছ নিজ হাতে তুলে মুখে
ডেকে নিয়ে আদর করে নিজ বাসায়।
এমনি ভাবে কাটিয়ে দেয় শিশুকাল
ছোট্ট খোকা মায়াবী হৃদয় নিয়ে,
খোজে সে ক্ষুধার্ত গরীব শিশু সকল
প্রত্যেক খুঁজে চলে খোকা কুড়েঘরে গিয়ে।
শিশু হয়ে দুখী শিশুর দায়িত্ব ভার
কাধে নিয়ে খোকা চলতো বারংবার।
৪০
দরদী খোকা
মানব দরদী খোকা দ্বারে দ্বারে ঘুরে
খোজ করে সারাক্ষণ শীতের প্রকপে
বস্ত্রহীনে যারা হেন অতি হিমে কেপে,
অযত্ন অবহেলায় শুয়ে থাকে ঘরে।
তাদের দেখে খোকার মন গলে পরে-
নিজের কাপড়খানি গায়ে দিয়ে সপে
তখনি চলে যায় দ্রুত বাজারে দেপে
ওদের হেতু খোকা বস্ত্র কেনার তরে।
শীতে কাপড় গরমে পাখা এ সমস্ত
গরীব মানুষের সাহায্য অনুদানে,
অবসর ভুলি তাই থাকি মহা ব্যস্ত
ছোটাছুটি করে সদা ঐ অন্নেষনে।
দিনরাত পরিশ্রম আর অনিদ্রায়
অক্লান্তে যায় খোকা দুখির ঠিকানায়।
৪১
দয়ালু খোকা
ক্ষুধার্ত প্রতিজনে খোকা খাবার দিয়ে
পিপাসায় কাতর যে তার মুখে পানি
অসুস্থজনের কাছে বৈদ্য পথ্য আনি
সেবে তাদের সতত উজার হৃদয়ে।
এতিম মিসকিন ভিক্ষায় রত হয়ে
পথে ঘাটে গৃহী ঘুরে বেড়ায় যখনি
কাছে ডেকে তাদের খোকা দুর্দশা শুনি
দান করে দু হাতে নিবাসে নিয়ে যেয়ে।
অর্থহীন প্রতিবন্দী পঙ্গু পাশাপাশি
মজলুম আরো কত দুস্ত অসহায়
ভূমিহীন গৃহহীন যারা চলে ভাসি
অর্থ শ্রম বিলিয়ে তাদেরকে হাসায়।
আশে পাশে দেখে কত শত জন দুখী
হাসি ফুটিয়ে তাদের খোকা হয় সুখী।
৪২
মুক্তির স্বাদ
তিরিশ লাখ শহীদ দুই লাখ নারী
শহীদের রক্ত নারীর ইজ্জত মান
দেশপ্রেমে ব্রতী হয়ে কত আত্মদান,
কোটি জন দেশের ঘর দুয়ার ছাড়ি
জান রক্ষায় তারা অন্যত্র দেয় পাড়ি।
মুক্তি পাগল যত বাংলার জোয়ান
একত্রে সমস্বরে গাহি মুক্তির গান
রণে রত হয়ে বাংলা মুক্তির তরি।
বাংলা স্বাধীন হলে হাসি মুখ চেপে
এথা হতে অন্যথা মনের জোরে ছুটে
আনন্দে বিভোর হয়ে বুক তুলে ফেঁপে
স্বাধীন সুখের কথা বলে গলা ফেটে।
মুক্তির স্বাদ কত মধুর আহা ভাই
পরাধীন যে উহা তাদের জানা নাই।
৪৩
মজিব বর্ষ
পৃথিবীতে একশত পঁচানব্বই দেশে
মহা সমারহে মেতে শত কোটিজন
আনন্দ উল্লাসে তারা পূর্ণ করি মন
কাধে কাধ মিলে সূখের জোয়ারে ভেসে
একত্রে জোট বাধে আজ মুজিব বর্ষে।
গাঁ থেকে শহর সর্ব জনসাধারণ
শপথ করে পাঠ মুজিবের মতন
গর্বতে দেশে পথ চলবে অনায়াসে।
দেশে দেশে প্রতিজন অতিধুম ধামে
করবে পালন সকলে মনের টানে,
সম্মিলিত উদ্যোগে মুজিব বর্ষ নামে
ব্যস্তে ব্যাকুল হবে তাহা উদযাপনে।
আদর্শ নীতি কর্মত্রই বেড়ে চলাতে
চিরজীবী হয়ে থাক মুজিব ধরাতে।
44. নরপিশাচ
ওরে নরপিশাচ খুনী পাপীর দল
ঘাপটি মেরে নিশ্চুপে কোথায় কেমনে
পাষাণ হৃদয়ে ছিলে অতীব গোপানে,
চোরের মতো আধারে নিয়ে অস্ত্রানল
একে একে গ্রহের নিলে যান সকল
আহ কি!ঘীর্নতম কর্মকাণ্ড এমনে
আর কি কেহ কোথাও দেখেছে ভূবনে,
নিদ্রিত জনে দিয়েছে বিশাক্ত ছোবল।
ওরে ঘাতক মীরজাফরের বংশ
কোন সাহসে শান্তির নীড়ে ঢুকে তোরা
মুজিবের পরিবার করিয়া ধ্বংশ
আনন্দে মেতেছিলে ওহে সব খুনিরা।
আজও কেদে কেদে সদা মনে শুধু আঁকি
কবে হবে ফাঁসি-আছে খূনি যারা বাকি।
45. বঙ্গবন্ধুর ছবি
যখন যেভাবে যাই আমি রাখি বুকে
বঙ্গবন্ধুর ছবিটা যত্ন সহকারে,
স্বপ্নের মাঝে কভূ হ্রদয়ঙ্গন করে
চলনে কর্মে শুধুই ভাবি ধুকে ধুকে
কোথায় আছো গুরুজী মোরে ছেড়ে লুকে।
একবার আসো যদি হেসে ফুরফুরে
দেখিতাম তোমায় অতীব মন ভরে,
এই চিন্তা মনে পুষে আমি যাই শুকে।
বঙ্গবন্ধু তুমি উদার মহতপ্রাণ
আজীবন ধরে তোমায় ছবিতে দেখি,
তুমি মোর বিবেক আদর্শ শিক্ষাজ্ঞান
তাই মনে তব স্মৃতি করি মাখামাখি।
শতগুণের অধিকারী তুমি মহান
সারাজীবন যেন গাই এ গুরুগাণ।
46. ধানমন্ডির বাড়ি
দিনে রাতে কতজন আসি সারি সারি
নেতা কর্মীর আস্ত অবাধ আনাগোনা
চেনা অচেনায় জমজমাট আঙ্গিনা,
বন্ধু বান্ধবদের প্রবল পিড়া পীড়ি
চাপে পড়ি “কেহ কয় আহ বুঝি মরি”।
আনন্দে উল্লাসে কারো হাসির আস্তানা
গরীব দুখীর যেটি মনের ঠিকানা
বঙ্গবন্ধুর সেটি ধানমন্ডির বাড়ি।
নেতাকর্মীর আড্ডা জনতার কল্লোল
ঘরে বাইরে সর্বদা চলে একটানা,
কারো শান্ত কারো উত্তেজিত শোরগোল
দেখে মনে হয় মস্ত মজলিসখানা
বাংলার মধ্যমা ধানমন্ডির বাড়ি
বৈঠকশারে বঙ্গবন্ধু সেথা গা ঝাড়ি।
47. পরাধীন জাতির আশা
নানা দেশে অহরহ যারা পরাধীন,
সবাই চায় আজ উপনিবেশ হতে
শাসন শোষন থেকে চিরমুক্তি পেতে,
“চিরশত্রু যাহারা মসনদে আশ্বিন
জন্ম ভূমে নিজ হস্তে করিবে বিলীন”।
এ আসে দেশ প্রেমিক প্রতি হাতে হাতে
অস্ত্র ধরে লড়াই করে সকলে যাতে
পরাধীন দেশটা যাতে হয় স্বাধীন।
দিন মাস বছর সবই হয় গত
তবু মেলেনা মুক্তি হায়রে হতভাগা,
যুদ্ধের মাঠে কত যে হয় হতাহত
খেয়াল নেই তাতে মাতৃভূমির লাগা।
শুধু আশা একটি বঙ্গবন্ধুর মতো
যদি কেহ আসে তবে মুক্তি হবেইতো।
48. বাঙ্গালীর স্বার্থপরতা
কেন মোরা তাকে বছরে মাত্র দুদিন
স্বরণ করি সকলে, বাকি দিন সবে
পুলকে ঘোরোন মোরা মাতি কলরবে,
ফুরফুরে মেজাজে ভদ্রে চলাকালীন
জন মধ্যে কথা বার্তা করিয়া শালীন
দিনের পর দিন পারি দিয়ে এভাবে
ভাবি শুধু সর্বদা কখন যে আসিবে
বঙ্গবন্ধুর সেই মৃত্যু ও জন্মদিন।
হায় বাঙ্গালী মোরা এতোই স্বার্থপর
যাহার জন্য আজ স্বাধীনভাবে চলি,
তাহার প্রতি কেন এক বছর পর
খালি পায়ে জানাই সবাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।
আসুন সবাই কায়মনে আজ থেকে
শ্রদ্ধা জানাই সদা জাতির জনককে।